জানো,আমার শ’খানেক শাড়ি আছে,
খুব সযতনে রাখি,মাঝে মাঝে রোদ দেই,
ভাঁজে ভাঁজে ন্যাপথলিন পুরে আবার রেখে দেই,
উৎসবে, অনুষ্ঠানে শাড়ি পরি অন্যদের মতো
যেমন পরতেন আমার মা,
যেমন পরতেন আমার দাদী
কিংবা আমার মায়ের দাদী
মানে আমাদের বমমা,
জানো কাঁথায় লাগানো শাড়িতে
এখনও আমার নানীমার গন্ধ পাই,
আমার দাদীর শাড়িতে লেগে থাকত
হলুদ কিংবা ঝোলের দাগ,
এতবড় সংসার সামলাতে সামলাতে
তেলে -নুনে এক হয়ে যেতো শাড়ি গুলো,
আমার দীর্ঘাঙ্গী মা যখন স্কুলে যেতেন
ইস্ত্রি করা মার দেয়া শাড়িতে খুব সুন্দর দেখাত,
সেই মা বিকেলে বাসায় ফিরে আটপৌঢ়ে শাড়ি
কোমরে পেঁচিয়ে অন্য এক মা হয়ে যেতেন,
আমাদের বাড়িতে কাজ করা রহীমুদ্দীনের বউ
সেও শাড়ি পড়ত।অদ্ভুতভাবে তার শাড়ির রং কেবল
নীল আর সবুজ হতো।
জেলেপাড়া থেকে মালতী মাসী আসত ডালের বড়ি বেচতে,তবে তার শাড়ির রং ছিল সাদা।
শাড়ি, শাড়ি আর শাড়িময় ছিল আমাদের চারপাশ।
শাড়ি মানে দুঃখিনী রাজকন্যার গল্প বলা আমার রানু ফু,
শাড়ি মানে আমার মায়ের আঁচল, শাড়ি মানে
শাড়ি পরা টেনেটুনে পাঁচফিটের আমি।
শাড়ি মানে লাল ,নীল, গোলাপি, হলুদ শাড়ি
শাড়ি মানে কাতান ,বেনারসি, জামদানি
শাড়ি মানে টাঙ্গাইল কিংবা পাবনার তাঁত
শাড়ি মানে রাজশাহী সিল্ক
শাড়ি মানে কুঁচির ভাঁজে দুঃখ
আর আঁচল ভরা সুখ
আর সবুজ সবুজ শান্তি ।