পর্বঃ০১
আজ থেকে চার বছর আগে। হ্যাঁ ঠিক চার বছর আগে আমার জীবনে এক রঙিন স্বপ্ন এসেছে।রঙিন বলার কারণ আছে।সময়টা আমার রঙিন স্বপ্নের মতো কেটেছে তাই। একটু বুঝিয়ে বলি।সবাই বলে আঠারো বছর বয়স না কী আবেগের বয়স। এ বয়সে ছেলেমেয়েরা আবেগের বসে প্রেম নামক অদ্ভুত অনুভুতির দেশে বিচরণ করে। আমি সেই আবেগের বয়সের ভিতরে ছিলাম। অদ্ভুত প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম।
আমার সেই আঠারো বছর বয়সে চোখের সামনে যা দেখতে পেলাম সবকিছু ভালো লাগতে লাগলো।তখন আমি ssc-তে পড়ি।প্রথমে আমার ক্লাসের একটা মেয়র সাথে প্রেমে জড়ালাম। মোবাইলে সাড়া দিন কথা বলতাম। ক্লাসে দু’জনে দু’জনের সাথে চোখাচোখি করতাম। মেয়েটা খুব সুন্দর ছিলো। আরে আমি বারবার মেয়ে বলছি কেনো।তার তো একটা নাম আছে।নাম হলো তামান্না। দেখতে অসম্ভব কিউট ছিলো।পড়াশোনাতে খুব ভালো ছিলো।আমিও মোটামুটি পড়াশোনায় ভালো ছিলাম। ক্লাসের দুই নাম্বার ছাত্র।
আবার ক্লাস প্রতিনিদিত্ব করতাম। সে হিসেবে মোটামুটি আমিও ভালোই ছিলাম। যাক যে কথা। গল্পে আসি। একদিন ক্লাসে বসে আমি তামান্নার সাথে কথা বলতেছিলাম। ক্লাসের সবাই ভাবতো আমার কাছে তামান্না পড়াশোনার জন্য আলোচনা করতো। তাই আর ক্লাসে কোনো সমস্যা হয় নাই।তো একদিন আমরা কথা বলতে ছিলাম। তখন তামান্না
আমাকে বললোঃ
-আচ্ছা মাসুম তোকে একটা কথা বলি।
-বল,একটা কেনো হাজারটা কথা বল।
-রাখতো তোর দুষ্টামী।
-এ কি বলছিস,আমার কথা তোর দুষ্টামী মনে হচ্ছে।
-না হচ্ছে না,এখন একটু মন দিয়ে আমার কথা শোন।
-হুম বল।
-বলছি কি চল না একদিন কোথাও ঘুরে আসি।
-কোথায় ঘুরতে যাবি।
-তুই যেখানে নিয়ে যাবি।
-আরে তোর তো একটা পছন্দ আছে না কী।
-না নেই,তোর পছন্দ মানি আমার পছন্দ।
-আমার পছন্দ হলেই তোর হবে।
-হুম হবে।
-আচ্ছা আমি একটু ভেবে নেই, কোথায় যাওয়া যায়।
-তোর এই সামান্য একটা বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে।
-হবে রে পাগলী।
-কেনো কেনো
-আরে গাদি তুই তো জানিস, আমার আব্বুর চারদিকে পরিচিত লোক আছে।
-তাতে কী?
-সমস্যা তো সেখানে।
-বুঝতে পারছি না, বুঝিয়ে বল।
-আব্বুর মাধ্যমে সবাই আমাতে তার ছেলে হিসেবে চিনে।বলতে পারিস সবাই আমাকে খুব খুব ভালো করে জানে।
-তো
-তো আবার কি, আশপাশে ঘুরতে গেলে যদি পরিচিত কেউ দেখে যে আমি মেয়ে নিয়ে ঘুরাঘুরি করছি তখন কি হবে ভেবেছিস।
-কি হবে।
-তুই আসলে একটা মাথা মোটা।
-এভাবে বলছিস কেনো।তুই এভাবে বললে আমার খুব কষ্ট হয়।
-ওরে আমার প্রেম রে।শোন যদি পরিচিত কেউ দেখে ফেলে তা হলে খুব সমস্যা হবে।তারা আব্বুকে বলে দিবে।তখন আর আমাদের প্রেম করতে হবে না।
-তামান্না অবুঝ বাচ্চাদের মতো করে বললোঃ সত্যি প্রেম করতে হবে না।
-কি ভাবে হবে,তখন তো আব্বু হেব্বি ভাবে মারবো।
-ও,তো ঘুরতে যাবি না।
-যাবো।
-খুশি হয়ে, কোথায় যাবি।
-পাশের থানায় একটা পার্ক আছে, সেখানে।
-তাই
-হ্যাঁ
-আজকে আর ক্লাস হবে।
-মনে হয় না।
-তা হলে চল বাসার দিকে যা-ই।
দু’জনে ক্লাস থেকে বের হয়ে বাসার দিকে চলে যেতে লাগলাম। রাস্তায় এসে তামান্নাকে রিকশায় উঠিয়ে দিয়ে আমি আমার বাসায় চলে আসলাম ।
দু-দিন পর আমি আর তামান্না ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পাশের থানার পার্কে চলে আসলাম। গাড়ির ভিতরে নরমাল ভাবেই আসলাম। কিন্তু পার্কে ঢুকে একটু বেকায়দায় পরলাম। তামান্না আমার হাত জড়িয়ে ধরলো।এতে আমি একটু ঘামাতে লাগলাম। বুকের ভিতরে হঠাৎ থরথর করে কেঁপে উঠল। এ-ই প্রথম এতটা কাছে আসলাম। তখন আমি তামান্নাকে বললামঃ
-তামান্না কি করছিস তুই।
তখন তামান্না আমার দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে থেকে রাগী ভাবে বললোঃ
-দেখো এখানে তুই তোকারি করে কথা বলবে না। তুমি করে বলবে।
-তা না হয় তুই তোকারি করলাম না।কিন্তু তুই যে আমার হাত ধরে আছিস।
-আবার তুই করে বলো।
-আচ্ছা বলবো না। তুমি হাত ধরে আছো কেনো, মানুষ দেখবে।
-দেখলে আমার কি, আমি তো আমার বয়ফ্রেন্ডের হাত ধরে আছি।
-আমার কেমন যেনো লাগছে।
-আমারও।
-তা হলে ছেড়ে দেও।
-না
-কেনো?
-লজ্জায় মাথা নিচু করে হেঁসে বললো,আমার খুব ভালো লাগছে।
-আমারও
-কী।
-তোমার ধরে থাকা আমারও খুব ভালো লাগছে।
-এটা শুনে তামান্না আরো লজ্জা পেলো।তার মাথা আরো নিচের দিকে ঝুকে গেলো। আমি বললামঃ
-চলো কোথাও গিয়ে বসি।
-হু চলো।
আমি আর তামান্না পার্কের একপাশে গিয়ে বসলাম। আরো অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরি করে বাসায় চলে আসলাম।
এভাবে চলতে লাগলো আমাদের প্রেম।
হঠাৎ…….
২য় পর্ব আসছে,,,,,,,,,,