২য় পর্বের পর থেকে,,,,,
তার ইনবক্সে অনেক গুলো রাগান্বিত ইমোজি। তার ঠিক নিচ থেকে দীর্ঘতম মেসেজ, সেখানে বলা”মিঃ নিহিড়ীক আমার প্রোফাইলটি একটি শহরের মতো। এখানে প্রত্যেকটি মানুষ প্রবেশ করে তার নিজের ইচ্ছে। আর কারো চলে যাওয়াটা আমার উপর নির্ভর। তাই আপনি ইচ্ছে করলেই হারিয়ে যাওয়ার কথা বলতে পারেন না। ”
আমি মনে মনে ভাবতেছিলাম “এই বুঝি বিড়ালের কপালে কাচ্চির শীকে ছিড়লো।”তবে এতোদিনের দীর্ঘতম কথপোকথনের জন্য তার প্রতি বিশেষ অনুভূতি কাজ করা শুরু করে।সে ও আস্তে আস্তে কথার পরিমান বাড়াতে থাকে।
সেঃআচ্ছা বলুন তো আমি আপনার কতটুকু নিকটতম হতে পেরেছি?
আমিঃ জানি না, আমি মনে করি আপনি আমার নিকট অক্সিজেনের মতো। যে পদার্থটি ছাড়া প্রাণীকুল মৃত। হোক সেটা প্রকৃতি প্রদত্ত কিংবা কৃত্রিম।
সেঃ সত্যি।
আমিঃ হ্যাঁ,কোনো সন্দেহ আছে কী?
সেঃ না,,,,,,।তবে কী আপনি আমার উপর দূর্বল হয়ে যাচ্ছেন?
আমিঃ তা জানি না কন্তু আপনি আমার নিকট হৃদ স্পন্দনের মতোএই বিষয়ে প্রশ্ন করায় সে কোনো উত্তর দেয় নি।
আমাদের কথার নাতিদীর্ঘ লাইন সমূহ দিগন্তের ন্যায় বিশাল হতে থাকে দিনে দিনে।
আর আমিও তার কথার মায়াজালে আবদ্ধ হতে থাকি।বহু দিন চলতে থাকে আমাদের এই উক্তির মেলা।তাকে নিয়ে হুটখোলা রিকশায় দাপিয়ে বেড়িয়েছি শহরের মানচিত্রে বহু দিবস। হঠাৎ আমি একদিন অসুস্থ হয়ে পরি।ডাক্তার অনেক পরিক্ষা নিরিক্ষা করতে দেয়।
যা-ই হোক আমি আর সে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম।সে কোনো দিন অসুস্থ হলে রাত জেগে তার জন্য খোদার নিকট প্রার্থণা করা,সে অভিমান করলে বিভিন্ন কথার ছলে তার অভিমান ভাঙানোর অকৃত্রিম চেষ্টা চালানো। হঠাৎ একদিন আমি কাজের জন্য শহর ছেড়ে দূরে চলে আসি। ভাগ্যের পরিহাসে আমার মোবাইফোন টাকা- পয়সা হারিয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন তার সাথে কথা হয় নি।
বুকে বা পাশে পকেট প্রায় রিক্ত ছিলো। তাই মোবাইলফোন কেনার সামার্থ হয় নি। তাকে ভিষন অনুভব করতে ছিলাম।সে যেন আমার মধ্যে সুপ্ত হয়ে থাকা আরেকটি মানব দেহ আমার অস্তিত্ব।
প্রায় ১ বছর পর ফিরে আসি আমার চিরচেনা শহরের মানচিত্রে। এসেই চলে গিয়েছিলাম চিরসবুজ প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে।সেখানে গিয়ে তার খোঁজ করতে কেউই তার সঠিক জবাব দিতে পারেনি। কেউ কেউ বলেছে সে শহর ছেড়ে দূরে চলে গেছে। আমি বাসায় ফিরে এসে যখন নতুন মোবাইল দিয়ে তার প্রোফাইলে প্রবেশ করি,,,,,,, দেখি বিশাল এক কথার সমারোহ অনেকবার Sorry লেখা আরো কতকিছু। সর্বশেষ আমাদের কথা হয়েছিলো বছর খানিক আগে। দুই মাস আগে তার প্রফাইল ডিএকক্টিভ হয়ে রয়েছে। আমি মানষিক ভাবে ভঙে পরেছিলাম।সবার নিকট থেকে আলাদা হয়ে একাকিত্ম বরণ করে নিয়ে ছিলাম।
তার আমারশেষ কথপোকথনে সে জানতে চেয়েছিলো আমি তাকে ভালোবাসি কিনা? আমি তাকে বলেছিলাম “আমরা লেখকেরা আমাদের লেখার প্রত্যেক গল্পের
প্রতি মানবী চরিত্র কে ভালোবাসি।যতক্ষন না গল্পের সমাপ্তি ঘটে।কিন্তু আপনার অবস্থান তার থেকে উপরে।আমি আপনাকে অনূভব করি।
তার দেওয়া সর্বশেষ উপহার ছিলো একটা রক্ত মাখা রঙিন টিস্যু পেপার।যেটা চামড়ার তৈরী থলেতে পরম যত্নে আগলে রেখেছিলাম।আজ থেকে আড়াই বছর পূর্বে আমি বিদায় নিয়েছি নির্বাক বসুন্ধরা থেকে। এখনো আত্মা হয়ে দোয়েলের বেসে ফিরে আসি শহরের বুকে তাকে একটিবার দেখার জন্য। অপেক্ষা করি তীর্থের চাতকের মতো।কারণ আমি তাকে কথা দিয়েছিলাম।
এই অপেক্ষার শেষ কোথায়???
সে কী কখনো ফিরবে শহরের বুকে? নাকি আমার বৃথা চেষ্টা ?এভাবেই পরিসমাপ্তি টানি এই চিরকুটের।” প্রিয় পাঠক সমাবেশ কাউকে ভালোবেসো না কারণ তাকে হারাবার ভয় থাকবে।মানুটিকে অনূভব করুন তার অস্তিত্বের সন্ধান পাবেন। আপনার মাঝে।
আরও পড়ুন—
অসমাপ্ত চিরকুট ১ম পর্ব
অসমাপ্ত চিরকুট ২য় পর্ব