গাজীপুরের শ্রীপুরে কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন। ধান কাটা মাড়াই থেকে শুরু করে বস্তাবন্দি সবই হচ্ছে এক মেশিনে। ফলে একদিকে যেমন ধান কাটা শ্রমিকদের চাহিদা মিটছে,তেমনি সাশ্রয় হচ্ছে সময় ও অর্থ।
বর্তমানে শ্রীপুর উপজেলায় ২টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দ্বারা ধান কাটা হচ্ছে।গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা একটি শিল্পাঞ্চল এড়িয়া। এখানে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় প্রায় চার শতাধিক কলকারখানা।শিল্পাঞ্চল হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে এখানে ধান কাটার শ্রমিক সংকট রয়েছে। তাই বেশি মজুরি দিয়েও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক।
তবে শ্রমিক সংকটের মধ্যে কৃষকের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন। সরকারি সহযোগিতায় ২টি হারভেস্টার মেশিন দিয়ে স্বল্প খরচে কৃষকের ধান কাটা হচ্ছে। এ মেশিনের সাহায্যে কোনো অপচয় ছাড়াই ধান কাটা ও মাড়াই করে বস্তাবন্দি করতে পারছেন তারা।
কৃষকরা জানান, হারভেস্টার ব্যবহার করে প্রতি ঘন্টায় এক একর জমির ধান কাটা এবং মাড়াই, পরিষ্কার সহ এক সাথে প্যাকেট জাত করা সম্ভব। খরচ ও কমেছে আগের চেয়ে ৭০ ভাগ।
টেংরা গ্রামের কৃষক তাইজুদ্দিন বলেন,ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছিলাম না। উপ কৃষি অফিসারের সহায়তায় আমার তিন বিঘা জমির ধান কাটা হয়েছে।
একই গ্রামের কৃষক আল আমিন জানান, ধান কাটা শ্রমিকের সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির কারণে জমি তৈরি থেকে ধান কাটা পর্যন্ত যে খরচ হয় উৎপাদিত ধানে সে খরচ ওঠে না। ফলে কিছু ধানখেতেই নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের কারণে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে আমার পাঁচ বিঘা জমি ধাক কর্তন, মাড়াই ও বস্তাবন্দি সহ সব কাজ এক সাথে করা হয়েছে। বর্তমানে শ্রীপুর উপজেলা কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের চালক রতন মিয়া বলেন, এ মেশিন দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। অল্প সময়ে ধান কর্তন ও বস্তাবন্দি সহ সকল কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।
আরেক চালক কৃষ্ণ বলেন, শ্রমিক সংকটের কারণে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। অল্প সময়ে ধান কর্তন, মাড়াই ও বস্তাবন্দি সহ যাবতীয় সকল কাজ করা হয়।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা জানান, কৃষিকে আধুনিকায়নের জন্য কৃষি যান্ত্রিকরণ অপরিহার্য। আমাদের শ্রীপুর উপজেলায় ২টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কর্তন এবং বস্তাবন্দি করা সহজ।এই যন্ত্রের মাধ্যমে একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয়ী হচ্ছে সেই সাথে শ্রমিক সংকট নিরসন হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে এর মাধ্যমে উপজেলায় ৭শ হেক্টর জমির ধান কর্তন করতে সক্ষম হয়েছে।