জামলপুর থেকে ঢাকাগামী বলাকা কমিউটার ট্রেন যাত্রা পথে তিনবার ইঞ্জিন বিকল হয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে তৃতীয় দফায় ইঞ্জিন বিকল হওয়ার ঘটনায় যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে ট্রেন চালককে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপশি স্টেশন মাস্টারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর পালিয়ে গেছেন ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার)।দুই ঘণ্টা যাবৎ শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে ট্রেনটি।
খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে বিকল্প লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।বলাকা কমিউটার ট্রেনের যাত্রী সজিব হাসান বলেন, আমি ঢাকার বিমান বন্দর যাব। ট্রেনটি শ্রীপুর পৌঁছানোর আগে দুবার ইঞ্জিন বিকল রয়েছে। আমাদের অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসে আবার বিকল হয়। এ সময় ট্রেনের যাত্রীরা স্টেশন মাস্টারকে অনুরোধ করে তিস্তা ট্রেনটি থামিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে। কিন্তু স্টেশন মাস্টার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। এ সময় উত্তেজিত যাত্রীরা স্টেশন মাস্টারের রুমের সামনে দাঁড়ায়। এরপর স্থানীয়রা বেশ কয়েকজন যাত্রীকে মারধর করে।
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শামীমা জাহান বলেন, জামালপুর থেকে ছেড়ে আসা বলাকা কমিউটার ট্রেনটি ৬টা ৫৩ মিনিটের সময় শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে ইঞ্জিন বিকল হয়। এর আগে দুই দফা ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা ফাতেমা নগর ও ময়মনসিংহে ইঞ্জিন বিকল হয়েছে।
তিনি বলেন, শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা বলাকা কমিউটার ট্রেনের যাত্রীরা দাবি করে আন্তনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামিয়ে তাদের তিস্তা ট্রেনে ঢাকায় পৌঁছে দিতে। এরপর আমি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তিস্তা ট্রেনের বিরতি দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর যথা সময়ে অর্থাৎ রাত ৮টা ২০ মিনিটের সময় আন্তনগর তিস্তা ট্রেনে শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার পরপরই ট্রেনের যাত্রীরা একসঙ্গে এসে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
তিনি বলেন, এ সময় উত্তেজিত যাত্রীরা স্টেশনে মাস্টারের রুমে ভাঙচুরের চেষ্টা করে। মারধর করা হয় ট্রেনের লোকো মাস্টারকে। মারধরের পর পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে ট্রেনের চালক।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, একটি ট্রেনের ইঞ্জিন বিকলের জেরে যাত্রীরা হট্টগোল করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিন সারানোর পর ট্রেনটি শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করবে। রাত সাড়ে ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল রয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিন সারানোর জন্য রেলওয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্টেশন মাস্টার। তবে কখন ট্রেনের ইঞ্জিন সচল হবে এ বিষয়ে কিছু তিনি জানেন না বলে জানান।