জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের বিড়ম্বনার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘লাঞ্চের পর আসুন’। দিন দিন এই বিড়ম্বনা আতঙ্কে পরিণত হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা দপ্তরে এই ‘লাঞ্চের পর আসুন’ বিড়ম্বনা থাকলেও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে এই বাক্যটি যেন রীতিমতো আইনে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, শিক্ষার্থীরা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সনদ তুলতে গিয়ে নানাভাবে বিড়ম্বনায় পড়ছেন। অফিসে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মচারী-কর্মকর্তা না আসা, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অফিস থেকে চলে যাওয়া, সার্টিফিকেট প্রাপ্তির তারিখে সার্টিফিকেট না পাওয়াসহ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে উল্টো কর্মচারী-কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের শিকার হন শিক্ষার্থীরা। সনদ তুলতে এভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সনদ তুলতে বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়াদৌড়ি করে স্বাক্ষর ও ক্লিয়ারেন্স নেয়ার পরও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে এসে ঘটে মূল বিপত্তি। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন পড়লেও শুনতে হয় ‘লাঞ্চের পর আসুন’। লাঞ্চের দুই ঘন্টা পর গেলেও দেখা মিলে না কর্মকর্তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় সনদ তুলতে প্রথমে নিজ বিভাগে গিয়ে বিভিন্ন স্বাক্ষর নিতে হয়,পরে প্রক্টর অফিস থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়,এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ঘুরে ঘুরে ক্লিয়ারেন্স নেয়ার পর সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে হয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর বরাবর।
আবেদনের পর জরুরি ভিত্তিতে তিন কর্ম দিবস এবং স্বাভাবিক নিয়মে সাত কর্ম দিবস সময় নেয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রেও জরুরি বাদে সার্টিফিকেট তুলতে গেলে ৭ কর্ম দিবসের চেয়ে আরও বেশি সময় নিয়েও নির্দিষ্ট সময়ে সনদ প্রদান করতে ব্যর্থ হয় দপ্তরটি।
ভোগান্তির শিকার শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা পড়াশোনার শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ ও অন্যান্য জরুরি কাগজপত্র নিতে আসি। কেউ কেউ চাকরির ফাঁকে আসি ছুটি নিয়ে। যথাসময়ে এসে কাগজ না পেয়ে দিনটি মাটি হয়ে যায়। আর সকালে এসে চেয়ার খালি থাকলে অফিস সহকারীরা বলেন নাস্তা করতে গেসেন আর দুপুরের দিকে এলে লাঞ্চ।
এ ভোগান্তির দ্রুত সমাধান চাই। বিরক্তির বিষয়টা তখন হয় যখন লাঞ্চ টাইমের পর এসে দেখা যায় কর্মকর্তারা তখনও নিজ টেবিলে লাঞ্চ করছেন বা লাঞ্চের জন্য বাইরে গেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেন নি বা পরবর্তীতে যোগাযোগ করেন নি।