সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহারের হিসাব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এমন তথ্য জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ি কোথায় যায় এবং একজন কর্মকর্তা কয়টা জিপ গাড়ি ব্যবহার করেন এসব খুঁজে বের করা হবে।
এ জন্য জেলা উপজেলাসহ সারা দেশে সরকারি গাড়ি আছে তার একটি তালিকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে একনেক সভায়। কোন গাড়ি কোথায় আছে, কত দিন কার্যকর থাকে সব তথ্য দিতে বলা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, আজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভা থেকে ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে সরকারের খরচ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৭৪৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ সহায়তা থেকে ১৬ হাজার ১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৬৫৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সংস্থান করা হবে।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অর্থের প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করে বলেন, দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ কম। এদিকে আমরাও অনেক বেছে এবং যাচাই বাছাই করে প্রকল্প নিচ্ছি। আবার যেসব রাজনৈতিক প্রকল্প আছে, কিছু এখনো শুরু হয়নি, সেগুলো নেওয়া হচ্ছে না। যেসব রাজনৈতিক প্রকল্পের কাজ শেষের পথে সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা থাকলে শেষ করা হচ্ছে। ফলে সরকারি বিনিয়োগও কম হচ্ছে। গ্রামে মানুষ বলে ব্যবসা ভালো না। সেই সঙ্গে আগে রাজনৈতিক নানা কার্যক্রম ছিল, মিছিল, মিটিং সমাবেশ হলে ট্রাক ভাড়া করে লোক আনা হতো। এতে অর্থ প্রবাহ বাড়ত। এখন তো সেসব কার্যক্রম নেই। এসব কারণে অর্থ প্রবাহ কমে গেছে।
তথ্য–উপাত্তে রাজনৈতিক প্রভাব আছে জানিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব আছে। এই বাস্তবতায় আমরা এখন বিবিএসের (পরিসংখ্যান অধিদপ্তর) দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিয়েছি। তারা যে হিসাব নিয়ে আসে, আমি আইনগতভাবে শুধু স্বাক্ষর করা ছাড়া আর কিছুই দেখি না।