পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. রেজাউল করিম সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ওই স্কুলের শিক্ষাথর্রিা।
আজ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থেকে একটি মিছিল বের করে তাইন্দং বাজারে গিয়ে সমাবেশ করে। এ সময় বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে সামিল হয় সাবেক শিক্ষার্থীরা।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, অতিরিক্ত টাকা আদায়, স্বেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এক দশকেরও বেশী সময় ধরে বিদ্যালয়ের কমিটি না করা ও সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ আকড়ে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ সময় ছাত্রছাত্রীরা ‘দফা এক দাবি এক-রেজাউল স্যারের পদত্যাগ’ ও ‘রেজাউল স্যার স্বৈরাচার-এ মুহুর্তে স্কুল ছাড়’ সহ নানা শ্লোগানে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানান।
শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ইরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন মো. রেজাউল করিম সরকার। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, বিনা রশিদে অর্থ আদায়, ভুয়া বিল করে টাকা আত্মসাত, অনিয়মসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেন তিনি।
সাবেক শিক্ষার্থী মো. শাহিন আলম বলেন, নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে এক দশকের বেশী সময় ধরে বিদ্যালয়ের নিয়মিত কমিটি না করা, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দেয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অভিভাবকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ করেন।
স্থানীয় শিক্ষার্থী অভিভাবক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষক প্রায়ই অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরন করতেন। অতিরিক্ত ফি নেয়া তার অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি গত ১৫ বছর ধরেই বিদ্যালয়কে নিজের পৈত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন। তার ক্ষমতার কাছে গত ১৫ বছরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও জিম্মি ছিল।
তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজী) মাকসুদুল হক বলেন, দীর্ঘ বছরেও বিদ্যালয়ে নিয়মিত কমিটি না করে নিজের একক আধিপত্য কায়েম করেছেন (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিম সরকার। তার কাছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লাঞ্চিত হওয়া নিয়ম ছিল। কোন কাজেই শিক্ষকদের সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজন মনে করতেন না।
তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিম সরকার বলেন, চাকরি করলে করবো না করলে নাই, আমি নাগরিক পরিষদ করি। আমার এতো দরকার নাই চাকরি না থাকলে নাই অসুবিধা কী। অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিক জিগ্যেস করলে বলেন, কোন বক্তব্য দিতে পারবো না, আপনারা যা মনে চায় তা লিখে দেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. শরীফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কোন অনিয়ম থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।