তালগাছের গ্রাম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম

রাজধানী টাইমসের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

গাছ মানুষকে অক্সিজেন দেয় ও ক্ষতিকারক কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। গাছ ছায়া দেয় ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষা করে কিন্তু গাছ যে আমাদেরকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা করে তা আমরা অনেকেরেই জানা নেই। হ্যাঁ রবীঠাকুরের তাল গাছের কথা বলছি।

তাল গাছ বজ্রপাত নিরোধক গাছ হিসেবে প্রমানিত হয়েছে। গত ৩ বছরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাতঘড়িয়া গ্রামে কেউ বজ্রপাতে মারা যায়নি বলে ওই এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।

তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে,উঁকি মারে আকাশে’ তাল গাছ সম্পর্কে এমন ভাবে আর কে-ই বা ভেবেছেন রবীদ্রনাথ ছাড়া? গ্রাম বাংলার অতি চির চেনা ফল তাল। আকাশ পানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি তালগাছ আর গাছে-গাছে ধরা তালফল ও বাবুই পাখির ঝুলন্ত বাসা কতনা মনোহর এবং পাখির কলতান কার না ভালো লাগে। তবে তাল গাছের আদি নিবাস আফ্রিকা হলেও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সাতঘরিয়ায় তাল গাছের গ্রাম বললে ভুল হবে না।

বিজ্ঞাপন

এটি যেন তালগাছের গ্রাম। সড়কের দুই পাশ সাড়ি সাড়ি তাল গাছ লাগানো তাছাড়াও বেশির ভাগ বাড়ির আঙিনায় দেখা মিলে পরিবেশ বান্ধব এ গাছের। ছোট-বড় তালগাছে ঘেরা মনোমুগ্ধ পরিবেশ যে কাউকে আকৃষ্ট করে। আর এ দৃশ্যটি মোবাইল ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে এ দৃশ্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন প্রকৃৃতি প্রেমী মানুষ এবং এসকল ছবি পোষ্ট করেন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সীমান্ত ঘেঁষা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঐতিহাসিক জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের সাতঘরিয়ায় গ্রামের সড়কের দুই পাশে সারি সারি তালগাছ। দৃষ্টিনন্দন সেই সড়কে ছবি তুলছেন কয়েকজন প্রকৃতি প্রেমী।

চট্টগ্রামের সিডিএ থেকে মোঃ সোহেল চৌধুরী তিনি আগ্রাবাদের একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করেন এসেছেন তিনি বলেন, সড়কের দুই পাশে অগণিত তালগাছ সাতঘরিয়া গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে যা দেখতে আমাদের এখানে ছুটে আসা।

বিজ্ঞাপন

তাই চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা আসার পথে এখানে বিড়তি দেয়া প্রাকৃতি প্রেমিদের জন্য এটি চমৎকার একটি দৃশ্য। আয়তনের দিক থেকে জেলার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের গ্রামেটি বড়। এর প্রায় প্রতিটি সড়কের দুই পাশে বজ্রপাত নিরোধক ও পরিবেশ বান্ধব সারি-সারি তালগাছ লাগিয়েছেন ওই এলাকার গ্রামবাসীগণ। এমনকি বাড়ির আঙিনাতেও রয়েছে ছোট-বড় তালগাছ।

৭৫বছরের প্রবীন সাতঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, এগ্রামের আদিকাল থেকেই আমরা তালগাছ রোপণে যেমন ছিলাম বর্তমানে আমাদের ছেলেরাও এর ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। সারি সারি তালগাছে যেমন গ্রামের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে তেমনি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাত মোকাবেলাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। গত ৩ বছরে বজ্রপাতে আমাদের এ গ্রামে কেউ মারা যায়নি।

কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য জেলার ১৭ উপজেলায় ৫০ হাজার তালের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এসব বীজ সড়কের পাশে না লাগিয়ে ফসলি মাঠের আইলে লাগানো হবে।

তিনি বলেন, তালগাছ বজ্রপাত নিরোধক ও পরিবেশ বান্ধব। নির্বিচারে এ গাছ উজাড় করার ফলে বর্তমান সময়ে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেছে। মাঠে কৃষকদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে কৃষি বিভাগ এ উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারি অর্থ বরাদ্দ পেলে আগামী বছর এক লাখ বীজ রোপণ করা হবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে কুমিল্লা বন বিভাগের প্রধান সহকারী মো. জাকির হোসেন বলেন, তালগাছ রোপণে সরকারিভাবে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। তারপরও জনস্বার্থে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে এক হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে।

সব ধরনের মাটিতে তাল গাছ জন্মে। সহজ রোপন পদ্ধতি, কষ্ট সহিষ্ণু, কম যতে উৎপাদন ও বৃদ্ধির ফলে গ্রামীণ সড়ক, মহাসড়ক, বাঁধ বেড়িবাঁধ, রেল লাইন, পুকুর পাড়, খালের পাড়, নদীর পাড়, জমির আঁইল, পতিত জমি ও বসতবাড়ীর শেষ সীমানায় তালগাছ রোপন উপযোগী স্থান।

তালগাছের গভীর মূলী ও শাখা প্রশাখা নেই বলে জমির আঁইলে রোপনে খাদ্য পুষ্টি ও ছায়া দিয়ে ফসলের ক্ষতি করে না। তালের পাতা দিয়ে হাত পাখা, মাদুর, টুপি, ঘরের ছাউনী, চাটাই, ছাতা, লাকরী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

গাছের ফাইবার বা আঁশ থেকে বিভিন্ন রকমের সৌখিন সামগ্রী তৈরি হয়, যথা- টুপি, ঝুড়ি, পাপোষ, ছোট বাষ্কেট, ও মাছ ধরার খলশানীতে ব্যবহৃত হয়। পুরুষ তাল গাছের ফুল বা জটা হতে রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে পাটালি গুড়, ভিনেগার, পিঠা, বড়া, লুচি, খাবার ইত্যাদি তৈরি করা হয়। পাকা তালের রস দিয়ে পিঠা, বড়া, খির, পায়েস তৈরি করা হয়। কচি ও কাঁচা তালের নরম শাঁস মুখরোচক পুষ্টিকর ।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল rajdhanitimes24.com এ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয়- মতামত, সাহিত্য, ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার ছবিসহ লেখাটি পাঠিয়ে দিন rajdhanitimes24@gmail.com  এই ঠিকানায়।

শীর্ষ সংবাদ:
খাগড়াছড়িতে স্বর্ণালঙ্কারের লোভে শাশুড়িকে হত্যা, জামাই গ্রেপ্তার লালমোহনে স্বামী-স্ত্রীর লড়াই ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য কাউখালীতে মাছ-মাংসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে কুমিল্লায় বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে, ৫ জন নিহত যমুনা টিভিতে প্রচারিত সংবাদের বিরুদ্ধে সচেতন এবং সাধারণ শিক্ষক সমাজ ব্যানারে মানববন্ধন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদ ও বিভাগ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি  প্লাস্টিক বর্জ্যের বিনিময়ে পরিবেশ বান্ধব গাছ উপহার দিলো ঐক্য-বন্ধন ডো‌নাল্ড লুর সফরে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী লালমোহনে জোরপূর্বক জমি দখল পরবর্তী সন্ত্রাসী হামলায় আহত-৫ আগের মালিক সব্দুলের কাছে ফিরে গেলো পাওয়ার ব্রীকস পায়রা বন্দরের নিজস্ব জেটিতে প্রথমবারের মতো ভিড়েছে বিদেশি জাহাজ ৪ হাজার ১শত ফ্রি ই-বুক এক্সেস পাবে বাকৃবি শিক্ষার্থীরা মাটিরাঙ্গায় সাড়া ফেলেছে সার্বজনীন পেনশন স্কিম গোয়ালন্দে পল্লী মঙ্গল কর্মসূচীর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত সাত কলেজের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরিক্ষা আগামীকাল বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর শ্রীনগরে উপজলা নির্বাচনে টাকা বিতরণের দৃশ্য ভিডিও ধারণ করায় দুই যুবককে মারধর নরসিংদীতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা কাউখালীতে শিক্ষার্থীদের মোবাইলে আসক্তি বাড়ছে