রাজবাড়ীতে ছিনতাই হওয়া চিনি ভর্তি ট্রাক উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত থাকা ৫ জনকে গ্রেপ্তার সহ নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো যশোর কোতয়ালী থানার কচুয়া গ্রামের মো. কুদ্দুস খানের ছেলে শামীম রেজা (৩৪), একই গ্রামের মৃত ওমর আলী খানের ছেলে নাজিম খান (৩৮), মনসেপুর গ্রামের মো. ইউনুস মোল্লার ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৩), কেশবপুর থানার মধ্যকুল সরদারপাড়ার মো. লিয়াকত আলী সরদারের ছেলে ট্রাক ড্রাইভার আবুল বাশার (৩০), মৃত ওয়াজেদের ছেলে মো. বাবু মিয়া (২৫)।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা জানান, যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা, অভয়নগর থানা ও কেশবপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২৩৩ বস্তা লুণ্ঠিত চিনি উদ্ধার, লুন্ঠিত চিনি বিক্রয়লব্ধ নগদ ২ লক্ষ টাকা এবং চিনি পরিবহন কাজে ব্যবহৃত ট্রাক উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভিন বলেন, ‘সিলেট কোতয়ালী থানার শেখ ঘাট কলাপাড়া গ্রামের মো. ইব্রাহীম বেপারীর ছেলে ও জননী ফুড প্রোডাক্টের জেনারেল ম্যানেজার মো. তানজিল ইসলাম বেপারী (২৬) গত ২৪ অক্টোবর বিকাল ৫টার দিকে কোম্পানির খাদিম নগর বিসিক থেকে চারশত বস্তা চিনি (ট্রাক ঢাকা মেট্রো ট-২২-৯৯৭০) লোড দিয়ে কোম্পানির শ্রমিক মো. সারোয়ার হোসেনসহ রংপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিলেট থেকে রওনা দেন। ট্রাকের ড্রাইভার মো. আবুল বাশার হেলপার মো. মাহবুবসহ গোয়ালন্দ ঘাট হয়ে রাজবাড়ীর দিকে আসতে থাকে।
গত ২৬ অক্টোবর রাত ২টার দিকে খানখানাপুর বড় ব্রীজের পাঁচশত গজ সামনে একটি সাদা প্রাইভেটকার যোগে ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ট্রাকের সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ট্রাকটি থামিয়ে ট্রাকে উঠে কোম্পানির শ্রমিক মো. সারোয়ার হোসেনকে জোরপূর্বক ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয়। এ সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সারোয়ার হোসেনকে মারধর করে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে হাত-পাঁ বেঁধে ফরিদপুর সদর থানার কানাইপুর হোসেন ফিলিং স্টেশনের কিছু দুরে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। তারা ট্রাকসহ চিনি নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। পরে সারোয়ার হোসেন ভোর ৪টার দিকে হাত পায়ের বাধঁন খুলে প্রথমে ঘটনাটি তার ভাই মো. মোবারক হোসেনকে জানায়। মোবারক হোসেন ঘটনা জানার পরপরই কোম্পানির জিএম মো. তানজিলকে তা অবহিত করেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর রাজবাড়ী থানার একটি চৌকস পুলিশ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষনপূর্বক গত ২৮ অক্টোবর রাতভর অভিযান পরিচালনা করে। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা, অভয়নগর থানা ও কেশবপুর থানার বিভিন্ন এলাকা পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ২৩৩ বস্তা লুণ্ঠিত চিনি উদ্ধার, লুন্ঠিত চিনি বিক্রয়লব্ধ ২ লক্ষ নগদ টাকা এবং চিনি পরিবহন কাজে ব্যবহৃত ট্রাক উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মঙ্গলবার রাজবাড়ী আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব, রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান সহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।