পটুয়াখালীর দুমকিতে কর্মস্থলে মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা পেয়ে রাজধানী শহর ঢাকাতে আয়েসি জীবন যাপন করছেন মোসা. হেপী আক্তার নামের একজন প্রাইমারী স্কুল শিক্ষকা।
অদৃশ্য ক্ষমতার বলে লাগাতার অনুপস্থিত থাকলেও তাঁর বেতন ভাতায় কখনো ছেদ পড়েনি! সরকারি বেতন-ভাতার টাকায় ঢাকায় অবস্থান করে নামি-দাবি স্কুলে সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, সংছিষ্ট অফিস ম্যানেজ থাকায় বছরের পর বছর এভাবেই তিনি চাকুরী করে আসছেন।
অনুসন্ধানে জানাযায়, উপজেলার ১৭নং বাদুয়া শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মোসা. হেপী আক্তার যোগদানের শুরু থেকেই নিজের খেয়ালখুশী মতে চাকুরি করছেন। মাসের বেশীর ভাগ সময়ই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। মাস শেষে এসে একদিনে হাজিরা খাতায় পেছনের স্বাক্ষর দেন। কখনো কখনো দেড় দু’মাসেও তার দেখা মেলে না। নানা অযুহাতে নৈমিত্তিক ছুটি, চিকিৎসা জনিত ছুটি ইত্যাদি দেখিয়ে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, চার সন্তানের জননী হেপী আক্তার তাঁর চাকুরী জীবনে একবারেও তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করেননি। চলতি বছরের গত ১মার্চ থেকে তিনি লাগাতার কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতা অনুযায়ী ১মার্চ ১০মার্চ পর্যন্ত হেপী আক্তারের স্বাক্ষরের কলাম ফাঁকা রয়েছে। তবে ৮মার্চ থেকে তার ৩মাসের একটি চিকিৎসা ছুটির আবেদন করেছেন যা চলছি বছরের ৮জুন পর্যন্ত শেষ হয়েছে। এর পরেও তিনি লাগাতার অনুপস্থিত থাকলেও রহস্যজনক কারণে প্রধান শিক্ষক, এসএমসি কিম্বা সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টারের সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা নেননি।
এর পূর্বে হেপী আক্তারের ছুটির রেকর্ডে দেখা যায়, ২০২০সালে জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত তিনি ৩মাসের চিকিৎসা ছুটি ভোগ করেছেন, চিকিৎসা সনদটি প্রশ্নবিদ্ধ! এর আগের কর্মস্থল উপজেলার তেতুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরিকালীন সময়েও অনুরূপ খেয়ালখুশি মতে চাকুরি করেছেন। সরকারি চাকুরি বিধি অনুসারে একজন স্কুল শিক্ষক কি কি ছুটি ভোগ করবেন, কতবার চিকিৎসা ছুটি পাবেন তা দেখভালের কর্তা ব্যক্তিগণও রহস্যজনক কাণে বিষয়টি চেপে গেছেন। একারনেই হেপী আক্তার লাগাতার ভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে রাজধানী শহরে বিলাসী জীবন যাপন করছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে স্কুল শিক্ষিকা মোসা. হেপী আক্তার বলেন, অসুস্থতার কারনে আমি ছুটিতে আছি। আমাকে দেখার জন্য কর্তৃপক্ষ আছেন, তারাই দেখছেন। এর বাইরে তিনি কোন কথা বলতে অসম্মতি প্রকাশ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. রাহিমা বেগম বলেন, হেপী আক্তার চিকিৎসা ছুটিতে আছেন। এর বেশী কিছু বলতে অসম্মতি প্রকাশ করেন।
উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) মোসা: মরিয়ম আক্তার বলেন, আগের বিষয়ে বলতে পারবো না, সম্প্রতি হেপী আক্তারকে ফোন করে সতর্ক করা হয়েছে। চিকিৎসা ছুটি বিধিসম্মত নয় দাবি করে তিনি বলেন, দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) কাজী মনিরুজ্জামান রিপন অভিযোগটি তিনি শুনেছেন স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এটিইওকে স্কুল পরিদর্শন পূর্বক রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ম্যানেজ প্রশ্ন অবান্তর দাবি করে তিনি আরও বলেন, আগের টিইও কি করেছেন জানিনা, আমার সময়ে অন্যায় করে কেউ পার পাবেন না।