টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ দ্রুত চালু না হলে আগামী ৪ ডিসেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনের সকল আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ, দোকানপাটসহ সকল যানচলাচল বন্ধ থাকবে। এমনটাই ঘোষণা দেন মানববন্ধনে উপস্থিত দ্বীপের সর্বস্তরের মানুষ।
৪ ডিসেম্বর থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা।রবিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সেন্টমার্টিন বাজারে স্থানীয়দের আয়োজিত মানব বন্ধনে এ ধর্মঘটের ডাক দেন।
তারা জানান, দ্বীপের ৯০ শতাংশ মানুষ পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। বছরে মাত্র ৪ মাস পর্যটন ব্যবসা করে যে আয় হয় সেটি দিয়ে বাকি সময় অতিবাহিত করতে হয় তাদের। এখন নাব্যতা সংকটের অজুহাতে টেকনাফ রুট থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ করায় পর্যটক সীমিত হয়ে গেছে দ্বীপে। ফলে আয় রোজগার কমে গেছে এখানকার মানুষের। এই অবস্থা চলতে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে দ্বীপে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে বলে দাবী তাদের।
এসময় সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ং ওয়ার্ড মেম্বার সৈয়দ আলম বলেন, টেকনাফ থেকে জাহাজ চালু না হলে এ দ্বীপের মানুষের ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে। ইনকাম না থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। এ বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সেন্টমার্টিন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খাতিব হাফেজ আবুল হোসাইন বলেন, আমাদের পেটে লাথি না মেরে আমাদেরকে একেবারেই মেরে সাগরে বাসিয়ে দিন। টেকনাফ থেকে জাহাজ চালু না হওয়া মানেই আমাদের পেটে লাথি মারার সমান।
সেন্টমার্টিন হোটেল রিসোর্ট মালিক এসোসিয়েশন সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, টেকনাফ থেকে জাহাজ চালু না হওয়ার জন্যে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। তারা নাব্যতা সংকটের বাহানা দিয়ে নিজেদের একচেটিয়া বিজনেস পরিচালনা করতে চাই। এবং কিছু পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে গলাটিপে মেরে ফেলার কৌশলে নেমেছে। সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ করার বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ঐসব পরিবেশের নামধারী সংগঠনগুলো। এরা পরিবেশের নাম দিয়ে বরং দ্বীপের পরিবেশের ক্ষতি করছে।
সেন্টমার্টিন হোটেল রিসোর্ট মালিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বলেন, অহেতুক নাব্যতা সংকট দেখিয়ে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছে। টেকনাফ বন্দরে মায়ানমারের বাণিজ্যিক বোট প্রতিনিয়ত চলছে। এই বাণিজ্যিক বোটগুলো পর্যটকবাহী জাহাজের চেয়ে আকারে অনেক বড় এবং অনেক বেশি পণ্য বহন করে। এতো বড় বড় বাণিজ্যিক পণ্যবাহী বোট চলতে পারলে পর্যটকবাহী জাহাজ কেন চলতে পারবে না? আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই নৌরুডে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করতে কোনো অসুবিধা হবে না। দেশের পর্যটন শিল্পকে বেগবান করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি কামনা করছি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলেই সবই সম্ভব। দ্বীপবাসী তাহার সহযোগিতা চাচ্ছি। টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চালাচলে অনুমতির মধ্য দিয়ে আমাদের দ্বীপের অর্থনৈতিক সংকট নিরসন হবে।
মানব বন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ চেয়ে “মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসীকে দূর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা করুন।মানবতার ফেরিওয়ালা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমরা সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসী টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু চাই। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা- সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষের জীবন-জীবিকা দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে।আমাদের মুখে আহার দিন আমাদেরকে বাঁচতে দিন দ্বীপের স্থানীয় মানিষদের বিভিন্ন ব্যানারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।