সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি ফলাফলে বিপর্যয় ঘটেছে। যার পাসের হার ছিল ১৩ দশমিক ৪০ ভাগ। ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে গত পাঁচ বছর ধরে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ওঠা-নামার মধ্যে রয়েছে। ২০১৮ সালে বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬২ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০১৯ সালে কিছুটা বেড়ে পাসের হার দাঁড়ায় ৬৭ দশমিক ০৫ ভাগে।
২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। তখন শিক্ষার্থীদের ‘অটোপাস’ দেওয়া হয়। ফলে পাসের হার ছিল শতভাগ।
করোনার প্রকোপ কমায় ২০২১ সালে সীমিত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তখন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৪ দশমিক ৮০ ভাগ।
সর্বশেষ ২০২২ সালে যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সে টির ফলাফল প্রকাশিত হলো ০৮ ফেব্রুয়ারী (বুধবার)। এবার পাসের হার ৮১ দশমিক ৪০ ভাগ।
অর্থাৎ, ২০২১ সালের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ ভাগ। এবার ৬৬ হাজার ৪৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫৪ হাজার ১২২ জন। অর্থাৎ, ফেল করেছে ১২ হাজার ৩৬৯ জন।
অথচ এর আগের বছর (২০২১) ৬৬ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেছিল ৩ হাজার ৪৬৮ জন।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীলদের মতে, এবার পাসের হার কমে যাওয়ার পেছনে গত বছরের বন্যা দায়ী। এ ছাড়া মানবিক এবং ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলের অবনতি অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি বিষয়ে এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো হয়নি। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ফলাফলে পিছিয়ে পড়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে।
ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ৯৭ ভাগ। এবার সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ৫০ ভাগে।
ওই বছর মানবিক বিভাগের ৯৬ দশমিক ১৩ ভাগ শিক্ষার্থীই পাস করেছিল। কিন্তু এবার পাস করেছে ৭৯ দশমিক ১৮ ভাগ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, এ বিভাগে পাসের হার কমেছে ১৬ দশমিক ৯৫ ভাগ!
২০২১-এ ব্যবসা প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের গড় পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৯৫ ভাগ। কিন্তু এবার ১০ দশমিক ৭২ ভাগ কমে পাসের হার হয়েছে ৮০ দশমিক ২৩ ভাগ।
ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সদস্য সচিব কবির আহমদ বলেন, গত বছর ভয়াবহ বন্যার পানি অনেকেরই বই-খাতা ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকে ঠিক মতো প্রস্তুতিও নিতে পারেনি। যে কারণে ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে।
তবে ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট নয় বলেও মন্তব্য তাঁর, যে ভয়াবহ বন্যার বিপর্যয় কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে. তাতে অসন্তোষের কিছু নেই।
এদিকে, পাসের হারে পিছিয়ে পড়লেও সিলেট বোর্ডে গতবছওেংষধস চেয়ে এবার জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০২১ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৭৩১ জন, এবার এ সংখ্যা ৪ হাজার ৮৭১ জন।