শেরপুরে অপহরণ ও ধর্ষণের পৃথক দুটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪ সিপিসি-১ জামালপুর। আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে ।
আটককৃতরা হলো ১। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ডেফলাই গ্রামের চাঞ্চল্যকর শিশু অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ১৪ বছরের সাজা এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মোঃ গোলাপ হোসেন (৪০) ও ২। জেলার নকলা থানাধীন চাঞ্চল্যকর কিশোরী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ১৪ বছরের সাজা এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শ্রী বাবুল তিলক দাস (২৬)।
বুধবার দুপুরে শেরপুর প্রেসক্লাবে র্যাব-১৪ সিপিসি-১ জামালপুর কর্তৃক আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, আসামী গোলাপ হোসেনকে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার জামগড়া, চিত্র সাইল বাজার এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গোলাপ হোসেন ঝিনাইগাতী উপজেলার ডেফলাই গ্রামের ছাবেদ আলীর ছেলে। প্রতিবেশী হতদরিদ্র ঘরের নাবালিকা ভিকটিমের পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ কলহ ছিল তার। ঘটনার দিন ১৮ এপ্রিল ২০১৪ খ্রি.ভিকটিম তার বাড়ীর সামনে আঙ্গিনায় খেলাধুলা করছিল। এসময় ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অপহরন করে ঢাকার এয়ারপোর্ট নর্দ্দা এলাকায় ভাড়া বাসায় জোরপূর্বক আটক করে রেখে ১০ দিন ধরে তাকে লাগাতার ধর্ষণ করা হয়।
ওই ঘটনায় ভিকটিমের বাবার দায়ের করা ঝিনাইগাতী থানার মামলা নং-০১, তারিখঃ ১২/০৫/২০১৪ ইং এর বিচারে ২৫/১০/২০২১ খ্রি. শেরপুরের জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গোলাপ হোসেনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদন্ড এবং ৯(১) ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। মামলার পর থেকেই আসামী ০৯ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিল।
অপর ঘটনায় জেলার নকলা থানার চাঞ্চল্যকর কলেজ পড়ুয়া কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বাবুল তিলক দাসকে একই রাতে গাজীপুর জেলার সদর থানাধীন ভোগড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাবুল দাস (২৬), ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানার নয়ন বাড়ী গ্রামের শ্রী পরেশ তিলক দাসের ছেলে।
জানা যায়, ভিকটিমকে কলেজে যাতায়াতের পথে বাবুল দাস অনেকদিন থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। ঘটনার দিন ২৪/০৮/২০১৯ খ্রিঃ সকালে ভিকটিম কলেজে যাওয়ার পথে নকলাস্থ ম্যানেজার মার্কেটের সামনে থেকে তাকে জোর পূর্বক অপহরণ করে সিএনজিতে উঠিয়ে গাজীপুরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম কৌশলে তার মায়ের মোবাইলে কল দিয়ে জানায়, বাবুল তিলক দাস গাজীপুরের বাসন থানাধীন ইটাহাটা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় রেখে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করতেছে।
পরে ভিকটিমের বাবার দাখিল করা মামলার প্রেক্ষিতে (নং-০৬, তারিখঃ ০৬/০৯/২০১৯ ইং) মামলায় বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপর গত ২১/০৪/২০২২ খ্রি. বাবুল তিলক দাসকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করেন।
