মা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল হবে তো?

রাজধানী টাইমসের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

প্রিয় পাঠক জানি না আমার এই লেখাটি মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে কতটুকু ভূমিকা রাখবে। তবুও লিখলাম, গত তিন-চার বছর যাবৎ ধরে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানের সময় মা ইলিশ নিধনের যে চিত্র দেখেছি এবং এবারও সেই চিত্র অনুমান করে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আর এই লেখার মধ্য দিয়ে অন্তত নিজেকে একটু হালকা করা যাবে এবং মা ইলিশ রক্ষার যে দায়বোধ সেটাও একটুক হলেও পালন করা হবে। আমার এই লেখার মাধ্যমে একজন মানুষকেও সচেতন করা যায়, একটা মা ইলিশও যদি রক্ষা পায়। তাই লেখার মাধ্যমে একটু চেষ্টা করা। রূপালি ঝিলিক। জাদুকরী স্বাদ। নাম তার ইলিশ। সোনলী আভায় ছড়ানো ইলশ।

রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক উপটৌকনে এ মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ইলিশ আমাদের ভৌগলিক নির্দেশক। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ এবং জাতীয় সম্পদ। এর মাধ্যমে অর্জিত হয় বৈদেশিক মুদ্রা। তাই স্বাভাবিক ভাবেই আমরা বলতে পারি ইলিশের অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক এবং ইলিশ একটি অতি উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাদ্য। ইলিশ পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই দায়। মাছ যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। ১০০ গ্রাম ইলিশে প্রায় ২১ দশমিক ৮ গ্রাম প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ওমেগা তিন ফ্যাটি এসিড, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন, বি ১২, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনে সিয়ামসহ অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলস।ইলিশ মাছরে ডিম পুষ্টিগুণে ভরপুর বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। ডিমের বিভিন্ন উপাদান শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে পারে। ইলিশ মাছরে ডিম নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। ডিমে থাকা ইপিএ, ডিএইচ, ডিপিএ মস্তিস্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধান করে। ইলিশের ডিমে থাকা ওমগো থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।

এটি রিউম্যাটয়েড অর্থারাইটিস দূরীকরণে সাহায্য করে। অনেকেই হয়ত জানেন যে, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসডি মানসিক অবসাদ, অ্যাংজাইটি ডিপ্রেশন কাটাতেও সাহায্য করে। এছাড়াও ইলিশ মাছের ডিমে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। ইপিএ, ডিএইচ শিশুদের চোখের জন্য তো ভালো বটেই, পাশাপাশি বড়োদের জন্যেও খুব ভালো। এটি রেটিনাকেও ভাল রাখে। তাছাড়া, ভিটামিন এ হিমোগ্লোবনি বাড়িয়ে রক্তস্বল্পতা কমায়। তাই মহিলাদের জন্যেও বিশেষ উপকারী এই মাছের ডিম। রক্ত পরিষ্কার করে রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে এ মাছের ডিম। ভিটামিন-এ এর পাশাপাশি ভিটামিন ডি ও ভরপুর থাকে মাছের ডিমে। ইলিশের ডিমে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের রোগ প্রতিরোধ করে। রক্তে জমাট বাঁধতে দেয় না, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

বিজ্ঞাপন

তাই ইলিশ রক্ষার দায়িত্ব আমার আপনার এবং সবার। আমাদের সফলতার আরেকটি প্রতিকের নাম ইলিশ। ইলিশ এখন দেশের গন্ডির বাইরে গিয়েও পররাষ্ট্র নীতিতেও ভূমিকা রাখছে। একটি মা ইলিশ প্রায় ২৩লক্ষ ডিম ছাড়ে। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশকে রক্ষা করতে না পারলে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে আমাদের অর্থনীতির ওপর, আমাদের জীবন যাপনের ওপর ,আমদের মৎস সম্পদের ওপর,আমাদের খাদ্যের ওপর। মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিস, ২০২০ এর তথ্য অনুযায়ী বিশে^র মোট ইলিশের ৮৬ভাগ ইলিশ বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। পলিবিধৌত মহিসোপানকে বলা হয় ইলিশের শ্রেষ্ঠ চারণভূমি। ভৌগলিক অর্থনীতিতে শুধু নয় জাতীয় অর্থনীতিতেও একটি সম্ভাবনাময় ইলিশ সম্পদ। পৃথিবীর বিখ্যাত বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদাও বিশ্বব্যাপী।

বিশেষ করে চাঁদপুরের ইলিশের স্বাদ ও খ্যাতি বিশ্বজোড়া। তাই চাঁদপুরকে বলা হয় ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর। তাই আমাদের ভৌগলিক টিকিয়ে রাখতে হলে মা ইলিশ রক্ষার কোন বিকল্প নাই। চলছে মা ইলিশ রক্ষার অভিযান। ইলিশ প্রজনন মৌসুম ১২অক্টোবর থেকে ২নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিনের মা ইলিশ রক্ষার অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা মা ইলিশ রক্ষার এই অভিযানের সফলতা কামনা করি। ১২অক্টোবর থেকে ২নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও মজুত নিষিদ্ধি করেছে সরকার। রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের জনগণের উন্নয়নের স্বার্থে মা ইলিশ রক্ষা করার অভিযানকে সফল করতে হবে যে কোন মূল্যে। মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা থাকলেও কিছু অসাধু ব্যক্তির অতিমাত্রার লোভের কারণে গত কয়েক বছর যাবৎ এই পরিকল্পনা ব্যাস্তে যাচ্ছে। পৃথিবীর সুস্বাদু মাছের মধ্যে ইলিশ অন্যতম একটি। পৃথিবীর মোট উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি ইলিশ আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। ইলিশ বাস করে সমুদ্রে এবং নদীতে। কিন্তু ডিম পাড়ে নদীতে এবং ডিম পাড়ার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে সমুদ্র থেকে নদীতে চলে আসে।

অর্থাৎ মিঠা পানিতে এবং মিঠা পানিতেই বাচ্চা ফুটে। নদী এবং নদীর মোহনা হলো ইলিশের প্রাকৃতিক হ্যাচারী। পদ্মা মেঘনা,যমুনাকে বলা হয় ইলিশের আতুর ঘর। আমাদের নদীগুলো ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত। আমাদের নদী গুলো মা ইলিশের বাপের বাড়ি। সন্তান প্রসবের জন্য বাপের বাড়ি যেমন একজন মায়ের জন্য নিরাপদ ঠিক তেমনি ডিম ছড়ার জন্য এবং বাচ্চা ফুটানোর জন্য নিরাপদ আমাদের নদীগুলো। তাই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি কারর জন্য নিষেধাঙ্গা চলাকালীন ১২অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন মা ইলিশ এবং ডিমওয়লা ইলিশ ধরা যাবে না। এক ইলিশে ২৩ লক্ষ ডিম। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই একটা নির্দিষ্ট সময়ে সমুদ্রে এবং নদী মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। ইলিশ মাছ দেশের মোট উৎপাদনের শতকরা ১২ভাগ দখল করে আছে। জাতীয় রপ্তানি খাতে এই খাতের আয় শতকরা চার ভাগ। কিন্তু নির্বিচারে মা ইলিশ এবং জাটকা আহরণ ও নিধনের ফলে এর উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সে কারণে মৎস্য সংরক্ষণআইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ,ইলিশের অভয়াশ্রম নির্ধারণ ও তা কার্যকর করণ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখা ও জাটকা নিধন বন্ধকরণ কর্মসূচিকে জোরদার করতে হবে। আমাদের খাদ্য তালিকায় প্রাণিজ আমিষের শতকরা ৫৮ভাগ আসে মাছ থেকে। প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি দূর করতে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। আমাদের অর্থনৈতিকক উন্নয়নে, কর্মস্স্থানে, দারিদ্র মোচনে এবং প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি দূরীকরণে মৎস্যখাতের উন্নয়ন নিতান্ত অপরিহার্য। পরিসংখ্যান মতে, দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ১২ ভাগ (যার আনুমানকি অর্থমূল্য আট হাজার ১২৫ কোটি টাকা) আসে ইলিশ মাছ থেকে। জিডিপিতে ইলিশ মাছের অবদান শতকরা ১ ভাগ।পৃথিবীর সব দেশেই এ মাছের চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর ইলিশ মাছ রপ্তানি করে প্রায় ৩, শ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিধন করে চলছে মা। এবারও গত কয়েকদিন আগের স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রিকার কিছু প্রতিবেদন দেখতে পাই প্রজনন মৌসুমে জেলেরা মা ইলিশ নিধনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর তাদের এই পৃস্তুতি যদি সফল হয় তবে মা ইলিশ ধ্বংস হবে। প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে মেঘনা, পদ্মা এবং তেতুলিয়া চলে যায় গংদের দখলে। প্রজনন সময়ের মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরার খবর আসে প্রতিদিনই কোন কোন দৈনিকে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা মেতে উঠেছে ইলিশ নিধনে। এই জেলেরা কি রাষ্ট্র কিংবা প্রশাসনের চেয়ে অধিক ক্ষমতাধর নাকি প্রশাসনের দুর্বলাতায় জেলেরা এই হীন কাজে মেতে উঠে । মা ইলিশ রক্ষার অভিযান চলাকালীন সময়ে জেলেদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হলেও কিছু অসাধু এবং অতি লোভী জেলেরা বিশেষ করে ভোলা, বরিশাল, পুটুয়াখালী, বরগুণা, পিরোজপুর, শরিয়তপুর, মাদারিপুর, লহ্মীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাওয়া, গজারিয়া, চাঁদপুরের মতলব, রাজরাজেশ্বর, হাইমচর, কাটাখালী, চরভৈরবী, ফেরিঘাট, ঈশানবালাসহ আরো কিছু কিছু এলাকায় দিনের আলোতে এবং রাতের আধাঁরে অনেকটা প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে নিধন করা হয় মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ। বর্তমান সময়েও এইদৃশ্য চোখে পড়বেনা বলে আমরা বিশ্বাস রাখি। কঠোরতা, জবাবদিহিতা এবং সচেতনতার বিকল্প নেই। মা ইলিশকে যদি প্রজনন মৌসুমে রক্ষা করতে না পারি তবে ইলিশ আর নদীতে পাওয়া যাবে না, ইলিশ পাওয়া যাবে যাদুঘরে।

এই ভাবে ইলিশ নিধন করতে থাকলে আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশের অস্তিত্বের সংকটের মুখে পড়বে এবং ইলিশ হয়ে পড়বে দুঃস্প্রাপ্য। ইলিশের যেমন আছে পুষ্টিগুণ তেমনি আছে অর্থনৈতিক গুরুত্ব। ইলিশেল মাধ্যমে জীবীকা নির্বাহ করে দেশের এক শতাংশ মানুষ এবং জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইলিশকে বলা হয় আমাদের দেশের সিলভার গোল্ড। ইলিশ রক্ষা করতে না পারলে আমাদের পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও বেড়ে যাবে। অর্থনীতিেিতও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। রক্ষা করলে মা ইলিশ,ঘুচবে অভাব আসবে সুখ, তাতেই ভাত তাতেই কাপড়।’ মা ইলিশ রক্ষা করতে পারলে সাধারণ জনগণের এবং রাষ্ট্রের যা না লাভ তার অনেক অনেক গুণ বেশি লাভ আমাদের দেশের জেলেদের। মা ইলিশ রক্ষার পাশাপাশি ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে নদীতে জেগে ওঠা ডুবো চর ও ভাসমান চরগুলো দ্রæততম সময়ের মধ্যে খনন করতে হবে। আর এতে শুধু ইলিশ উৎপাদনই বৃদ্ধি পাবে না রোধ হবে নদী ভাঙ্গনও। ইলিশ অনেক দ্রæতগতি সম্পন্ন মাছ্। এরা সমুদ্র এবং নদীতে দল বেধে চলে। এরা যেই গতিতে সামনে যায় এবং চলার পথে বাধা পেলে তার চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে পিছনের দিকে ছুটে চলে। তাই ডুবো চর এবং ভাসমান চরের কারণে নদীতে ইলিশের উৎপাদন কমে যাচ্ছে পক্ষান্তরে মায়ানমারে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী দূষণ এবং নদী দখল ইলিশসহ মিঠা পানির অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিও ক্ষেত্রে বড় বাধা। ইলিশসহ মিঠা পানির অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাননীয় কর্তৃপক্ষকে নদী দূষণ রোধ এবং নদীকে দখলমুক্ত রাখতে হবে। কিছু দিনের নৌকাবিহীন নদৗ যা হবে আগামী দিনের মাছেপূর্ণ নদী। মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার মধ্য দিয়ে আমাদের ইলিশের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং এতে জেলেদের মাঝে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিলে আসবে ।

মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করতে হলে প্রশাসনের নজরদারী বৃদ্ধি করতে হবে, মা ইলশ রক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপের কঠোর হস্তে সফল বাস্তবায়ন করতে হবে। অভিযানে কেউ যেন কোন প্রকার সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে সেইদিকে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদেরকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রশাসনের পাশাপাশি আামাদের সেনাবাহিনীকেও ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করার জন্য কাজে নিয়োজিত করা যেতে পারে। মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করার জন্য আমাদের প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াকে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। মা ইলিশ রক্ষার উপকারীতা মিডিয়ার মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরতে হবে। এই অভিযানকে সফল করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন নাগরিককেও এগিয়ে আসতে হবে। লোক দেখানো অভিযান নয় চাই মা ইলিশ রক্ষার সফল অভিযান। এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু করতে হবে বিনা বাধায় বিনা সংকোচে। প্রশাসনের যথাযথ দায়িত্ব পালন এবং জনসচেতনতাই পারে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করে তুলতে। নিষিদ্ধ সময়ে যারা জেলেদেরকে মা ইলিশ ধরার কাজে উৎসাহিত করে তারা দেশ ও জাতির জাতীয় শত্রæ।

তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে প্রশাসনের কোন রকম অবহেলা পরিলক্ষিত হলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। নিষিদ্ধ সময়ে কোন জেলে মাছ ধরলে তার জেলে কার্ড বাতিলসহ নূণ্যতম ১০বছরের জামিন অযোগ্য সশ্রম কারাদন্ড দিতে হবে। টকশো, বিজ্ঞাপন চিত্রের মাধ্যমে এবং সামাজিক সচেতনার মাধ্যমে মানুষের নেতিবাচক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারলে মা ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ যেমন থাকতে হবে তেমনি থাকতে হবে সচতেনতা মূলক কার্যক্রম। এই দুই সমান গতিতে চললেই রক্ষা পাবে পৃথিবী বিখ্যাত চাঁদপুরের ইলিশ এবং বাড়বে রপ্তানি আয়। ম্ াইলিশ রক্ষা করতে হলে প্রতিটি মোহনায় নৌ-বাহিনী র্যাব ও বিজিপি টহল নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবী বলে আমরা মনে করি। যে কোন মূল্যে মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার অভিযনকে সফল করে তুলতে হবে।

অপরাধিরা সংখ্যায় কম হয়েও আমাদের উপর কর্তৃত্ব করে যাচ্ছে যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমরা আশা করি মা ইলিশ ও ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল হবে। তা যতই কঠোর ও কঠিনই হউক। অভিযান ব্যর্থ হলে তা আমাদের পরাজয়। আমরা আমাদের পরাজয় চাই না। যেভাবেই বলি ডিম ছাড়ার মৌসুমে মা ইলিশ ও ডিমওয়লা ইলিশ রক্ষার বিকল্প নেই। আমরা দেখতে চাই না নিষেধাঙ্গা অমান্য করা অসাধু এবং লোভী জেলেদের মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ নিধনের মহোৎসবের কোন চিত্র। আমরা বিশ্বাস করি আইন অমান্যকারীরা রাষ্ট্রের চেয়ে বেশি শক্তিশালী নয় এবং তারা সংখ্যায়ও হাতে গোনা। হাতে গোনা জেলেদের জন্য সমস্ত দেশের ক্ষতি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে মা ইলিশ রক্ষার গুরুতএকটি ডিমওয়লা মা ইলিশকে নিধন করা মানে হচ্ছে আগামী দিনে তেইশ লক্ষ ইলিশকে হত্যা করা। তাদের বুঝাতে হবে এক ইলিশে তেইশ লক্ষ ডিম,মা ইলিশের যতœ নিন। ম্ াইলিশের যতœ করি, ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করি। তাই অভিযানের মাধ্যমে একটি ডিমওয়লা মা ইলিশকে রক্ষা করতে পারলে আগামী দিনের জন্য তেইশ লক্ষ ইলিশকে রক্ষা করা যাবে।ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন। এ ক্ষেত্রে মা জেলেদেরকে বুঝাতে হবে এই ইলিশের মালিক জেলেরাই এবং এরা হচ্ছে তাদের সন্তানের মতো। এই মা ইলিশ(সন্তান)কে রক্ষা করতে পারলে এরাই জেলেদের আগামী দিনের অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করবে। সন্তানেরক্ষতি হলে যেমন পরিবারে অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য বিপর্যয় নেমে আসে ঠিক তেমনি এই মা ইলিশকে রক্ষা করতে না পারলে জেলেদের জীবনেও বিপর্যয় অনিবার্য। আর এই বিপর্যয় আমরা দেখলাম ২০২৩সালে ইলিশ মৌসুমে ইলিশের আকাল।

যদি প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা ও জাটকা নিধন বন্ধ থাকে তাহলে ২১ থেকে ২৪ হাজার কোটি নতুন পরিপক্ব ইলিশ পাওয়া যাবে। এতে বছরে সাত হাজার কোটি টাকা মূল্যের ইলিশের বাজার সৃষ্টি সম্ভব হবে বাংলাদেশে এতে অর্থের প্রবাহ বাড়বে , বাড়বে চলছে কর্মসংস্থান। যা নিঃসন্দেহে দেশেরে গোটা অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করে তুলবে পাশাপাশি দেশে প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ হবে। আর ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে চক্রবৃদ্ধি হারে। আমার বাড়ি চাঁদপুরের হাইমচরের মেঘনার পাড়ে। যেখানে ইলিশের বাড়ি বলে খ্যাত। মৌসুম ছাড়াও এখানে সবসময়ই সুস্বাদু ইলিশ পাওয়া যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য এবার ভরা মৌসুমেও চাঁদপুর,হাইমচরের মেঘনা ছিল অকেনটাই ইলিশ শূন্য। এই মৌসুমে আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে ইলিশের স্বাদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হয়েছে ইলিশের আকার এবং এর আকাশ চুম্বী দামের কারণে। এর প্রধান কারণ দুটি। এক জাকটা রক্ষার অভিযানের ব্যর্থতা এবং দুই মেঘনাতে প্রচুর ডুবোচর। এই ডুবোচরের কারণে জালের প্রবাহ কম থাকায় ইলিশের বিচরণও কম। সামাজিক আন্দোলন, নৌ-বাহিনীর টহল, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও অবস্থান, আইনের সঠিক প্রয়োগ, ডুবোচর খনন এবং সচেতনতার মাধ্যমে মা ইলিশ ও ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল এবং ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

‘নৌ পুলিশকে সহযোগতিা করি নিষিদ্ধকালীন সময়ে মা ইলিশ না ধরি। মা ইলশি সংরক্ষণে ১২ অক্টোবর থেকে আগামী ২ নভম্বের র্পযন্ত ইলশি মাছ ধরা বন্ধ।ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে চলতি বছররে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভম্বের পর্যন্ত। মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরবিহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আসুন সকলে মিলে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করে তুলি এবং দেশপ্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করি।

 

সুধীর বরণ মাঝি, শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়, হাইমচর-চাঁদপুর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল rajdhanitimes24.com এ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয়- মতামত, সাহিত্য, ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার ছবিসহ লেখাটি পাঠিয়ে দিন rajdhanitimes24@gmail.com  এই ঠিকানায়।

শীর্ষ সংবাদ:
বিশ্বব্যাপী ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ছে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ঢাকাসহ ২৫ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আজ রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে শনিবার থেকে রাণীশংকৈল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা, জমে উঠলো নির্বাচন গুইমারায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলেন ইউএনও’র সহধর্মিণী ও বড় ভাই ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: পদে ১২ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ নির্বাচিত হলেন মুফতি মাও: মুজির উদ্দিন মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে আ.লীগকে বিজেপির আমন্ত্রণ উপজেলা নির্বাচন: আরও ৬৬ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বিএনপি’র প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অফিসার পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া যুবক গ্রেপ্তার গরমে মানুষকে স্বস্তি দিতে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসের শরবত বিতরণ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমর্থকদের সংঘর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য: দুমকির ইউএনও’কে লিগ্যাল নোটিশ হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড রাজশাহীতে ৫২ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড যশোরের ভৈরব নদে পাওয়া বস্তাবন্দি মৃতদেহের পরিচয় সনাক্ত নরসিংদীতে নগদের ৬০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩ জন গ্রেপ্তার শেবাচিম হাসপাতাল র্যাবের অভিযানে দালাল চক্রের ২৫ সদস্য আটক