বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন সুতালড়ী (ভাষন্ডা) গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত বেপারী ও তার পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘেরে অনধিকার প্রবেশ, মাছ চুরি,মারধর,মার্ডারকেসসহ একেক সময় এক এক ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত বেপারী। স্থানীয় মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ১৪নং বারুইখালী ইউনিয়নের দক্ষিন সুতালড়ী (ভাষন্ডা) গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গাউছুল হক হাওলাদার দুলাল ও তার লোকজন একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত বেপারী (৭০) বলেন, আমার পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গাউছুল হক হাওলাদার দুলাল ও তার লোকজন দিয়ে বিভিন্ন সময় আমি ও আমার পরিবারের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যার অধিকাংশ মামলায় আমি বে-কচুস খালাস পাই। তারা আমি ও আমার পরিবারের নামে একাধিক বার ঘেরে অনধিকার প্রবেশ , মাছ চুরি,মারধরসহ মিথ্যা মামলা করে আসছে।
আমি একজন মুক্তযোদ্ধা হওয়া স্বত্তেও তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে একাধিকবার মারধর করেছে। ইউপি সদস্য গাউছুল হক হাওলাদারের বিরুদ্ধে কোন কথা বললেই আমার পরিবারকে হমকি, মিথ্যা মামলাসহ নানা ভাবে হয়রানি করে। তাদের অত্যাচারের এলাকার সাধারন মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এখন আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের একটি গরু চুরির মামলায় আসামী হিসেবে জড়িয়েছে। এখন আমি সমাজে মুখ দেখাতে পারি না। ইউপি সদস্য মামলাবাজ গাউছুল হক দুলাল ও তার লোকজনের হাত থেকে বাচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, শুধু আমি না এলাকার অনেক সাধারন মানুষের নামে বিনা কারনে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে সে। তাদের মামলার ভয়ে অনেক মানুষ এখন এলাকা ছাড়া।
মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত বেপারীর স্ত্রী মর্জিনা বেগম(৪৫) বলেন, আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির বিরোধে আদালতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্য গাউছুল হক দুলাল আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে একেক সময় আমাদের পরিবারের সদস্যর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন,আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও আমার স্বামী একজন মুক্তিযোদ্ধা,তারা আমার নামে গরু চুরির একটি মিথ্যা মামলাও দিয়েছে যা খুবই দুঃখ জনক। আমি চাই প্রত্যেকটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।
পাশ্ববর্তী প্রতিবন্দী জাকির বয়াতী বলেন, আমি একজন প্রতিবন্দী হওয়া স্বত্তেও এই গাউছুল হক দুলাল মেম্বার আমি ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ঘের চুরিসহ একাধিক মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। সে মেম্বার হওয়ার পর থেকে এলাকায় তার কথার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই মারধরসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। তিনি বলেন, দুলাল মেম্বারের ঘেরের পাশের্^ আমার ঘের সে তার ঘেরের ভেড়ি না দিয়ে মাছ চাষ করে। ক্ষমতার জোরে ঘেরের ভেড়ি না দিয়ে আমাদের ঘের দিয়ে চলাচল করে। আমি যেন ঘের করতে না পারি এজন্য সে ও তার লোকজন আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের একাধিকবার মারধর করেছে। সে এখন আমার ঘের দখলের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিজ উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেনের সাথে ইউপি সদস্য গাউছুল হক হাওলাদার দুলালের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। ষড়যন্ত্রের স্বীকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটিকে প্রতিপক্ষরা একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি ,ভুমিদস্যু ও মামলাবাজদের হাত থেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বাচাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
গাউছুল হক হাওলাদার দুলাল বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ,বানোয়াট।
এ বিষয়ে মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা এই পরিবারের সদস্যর বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে। প্রত্যেকটি বিষয় সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।