বসতবাড়ি ও চলাচলের রাস্তা ভাঙণরোধে বুধবার (২৯জুন) দুপুরে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পশ্চিমদেবু (আমডারা) গ্রামে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসি। মানববন্ধন শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী ও দুই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
খাল খনন ও সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়নে এলজিইডির অধীনে সদর ইউনিয়নের অনন্তরাম (আমডারা) মৌজা কিছু অংশ ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পশ্চিমদেবু (আমডারা) মৌজার কিছু অংশ প্রায় দুই কিলো কাটানদীর খাল পুনঃখনন করার কারণে কাটানদীর দুই পাশে রাস্তা, পাড় ভেঙ্গে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি ভেঙ্গে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এমনকি ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চলাচলে করতে পাচ্ছেন না।
প্রায় ১২ফিট রাস্তা ভেঙে বাড়ির কিনারায় চলে এসেছে কাটানদীটি। আর কিছুদূর পাড় ভাঙলে বিলিন হয়ে যাবে কয়েকশ বসতবাড়ি। মানববন্ধনে গ্রামবাসিরা জানান, প্রায় ৭-৮ মাস আগে খাল খনন ও সংস্কার প্রকল্পের কাটানদী খালটি পুনঃখননের কাজ শুরু হয়। সেসময় খাল খনন করতে বাধা দিয়েছিল গ্রামবাসি। কিন্তু খাল খনন কমিটির সভাপতি সন্ত্রাসীদের ভয় দেখিয়ে খনন কাজ শেষ করে বলে জানান গ্রামবাসি। এতে করে খনন কাজ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পর থেকে ওই এলাকার পাকা বাড়িঘর ও রাস্তা ফাঁটল ধরে। এ বিষয়ে খাল খনন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কাটানদী খালটি বসতবাড়ির কিনারায় চলে এসেছে। কারো ঘরের মেঝে ফাঁটল ধরেছে। কেউ বাঁশ কাঠ দিয়ে সেই ঘরগুলো আটকে রাখার চেষ্টা করছে। এমনকি টিউবওয়েলের পাড়, ল্যাট্রিন, বাড়ির যাতাযাতের রাস্তা ফাঁটল ধরে হেলে পড়েছে। যেকোন মুর্হুতে বিলিন হয়ে যাবে বাড়িঘরগুলো।
ষাটোর্ধ্ব রাহেলা বেগম জানান, প্রতিরাতে ভাঙণের শব্দে আমাদের ঘুম ভাঙে। আমরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকি। অতিকষ্টে কয়েক শতক জমি কিনে বাড়িঘর করেছি। ছেলেমেয়ে নাতি-নাতনি নিয়ে এই বাড়িতে বসবাস করি। সেই বসতবাড়িটাও ভেঙে যাচ্ছে। এই বাড়িটা ভেঙে গেলে আমরা থাকব কোথায়।
এটিএম আখতারুজ্জামান মিজান বলেন, খাল খনন ও সংস্কার প্রকল্পের আওতায় কাটানদীটি খননের ফলে উপকার চেয়ে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে বেশি।
রাকিবুল হাসান জানান, অপরিকল্পিতভাবে খাল খনন করায় রাস্তা ভাঙণের পাশাপাশি একটি কালভার্ট ব্রিজও ভেঙে গেছে।
উপজেলা কাটানদী খাল খনন সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, পাড় ভেঙে যাচ্ছে, শুনেছি। আমি জাইকার প্রতিনিধি ও প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে ভাঙণরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসের শাহ মাহবুবার রহমান পরিদর্শনে এসে বলেন, এটা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে রাস্তার ভাঙণ ধরেছে। দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ শামসুল আরেফীন জানান, এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়ে আমরা উপজেলা থেকে পরিদর্শনে এসেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।