সংসারে অভাব অনটনের কারনে বেশি দুর লেখাপড়া করতে না পারা অন্ধ রফিকুল ইসলাম ইসলাম এখন প্লাস্টিক কারখানা মালিক।
বর্তমানে তার কারখানায় ১৫-২০ জন কর্মচারি কাজ করে জীবন নির্বাহ করে আসছে।শুধু কুড়িগ্রামেই না, লালমনির হাটেও গড়েছেন আরো একটি প্লাস্টিকের কারখানা। অদম্য ইচ্ছে শক্তি থাকায় সমাজের বোঝা না হয়ে রফিকুল ইসলাম এখন সফল ব্যবসায়ী।কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বিসিক শিল্প এলাকায় ভাই ভাই প্লাস্টিক কারখানার মালিক তিনি।লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার সাপটিবাড়ি ইউনিয়নের খাতাপাড়া মাজার গ্রামের আব্দুস ছাত্তার ব্যাপারীর মেজো ছেলে।
প্লাস্টিকের কারখানার মালিক হওয়ার বিষয়ে কথা হলে তিনি b বলেন,আমি ছোটবেলা থেকে বড় ভাই মোঃ শহিদুল ইসলামের সাথে পরিত্যক্ত বর্জ্য প্লাস্টিকের বোতল,জার,ঘর বাড়ির বিভিন্ন প্রকার নষ্ট ভাঙাচুরা প্লাস্টিকের পন্য কুড়ে বাজারে বিক্রি করতাম।পরে বড় ভাই ভাঙরি কাঁচামালের ব্যবসায় শুরু করেন।স্কুলের পড়াশোনা করার পাশাপাশি ভাইয়ের ব্যবসায় সময় দিতাম।যখন এসএসসি পরিক্ষা পাশ করি তখন আমার চোখ দুটো অন্ধ হয়ে যায়।
চোখে দেখতে না পাড়ায় পড়াশোনা বন্ধ করে ভাইয়ের ব্যবসায় মনযোগী হই।ওখান থেকে পরিত্যাক্ত বর্জ্য প্লাস্টিকের পণ্যের বাজার,ভাঙাচুরা মালামালের গ্রেড,প্লাস্টিকের কাটিং পদ্ধতি,বাজারজাত করনের প্রক্রিয়াসহ ঢাকার ব্যবসায়ীদের সাথে পরিচয় হয়।এর পর সামান্য টাকা দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কুড়িগ্রামে এসে ব্যবসা শুরু করি।এখন আমি সমাজের বোঝা না।আমি একজন সফল ব্যবসায়ী।এ প্লাস্টিকের ব্যবসা থেকে আমার ভালো আয় হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন,আমি অন্ধ হওয়ায় সরকারি বেসরকারি ব্যাংকগুলো আমাকে কোন ঋণ বা সহযোগীতা করে নাই।একমাত্র বিসিক আমাকে বিভিন্নভাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করছেন।
প্লাস্টিক কারখানার কর্মচারি মোঃ রাজু আহমেদ বলেন,আমি ১২ বছর ধরে রফিকুল ভাইয়ের কারখানায় কাজ করে আসছি। আমার মত আরো ১৫-২০ জন নারী পুরুষ এ কারখানায় কাজ করে সংসার চালায়। প্রতি মাসে ওভারটাইমসহ জন প্রতি ১৫ -২০ হাজার টাকা পাই।এনার এখানে কাজ করে আমাদের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসছে।
আরেক কর্মচারি মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন,রফিকুল ভাইয়ের প্লাস্টিকের কারখানা দীর্ঘদিন ধরে দিনমজুরির কাজ করে আসছি।আমরা বাইরে থেকে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে পড়ে থাকা নষ্ট প্লাস্টিকের আসবাব পত্র, বোতল,জার,ছিপির গ্রেড করে হিট মেশিনে কাটিং করে বস্তা প্যাকিং করি।মাসে যা বেতন পাই।সংসার ভালো চলে।
কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর উপ পরিচালক মোঃজাহাঙ্গীর আলম বলেন,আমাদের বিসিক শিল্প এলাকায় ভাই ভাই প্লাস্টিক সেন্টারের একজন শিল্প মালিক রফিকুল ইসলাম।তিনি তিনি মুলত পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী কিনে প্রসেসিং করে চিপ,কাটিং করে তা রিসাইক্লিং করে নতুন প্লাস্টিক তৈরির উপযোগী করার কাজ করেন।বর্তমানে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।দৃষ্টি প্রতিবন্ধি হওয়ায় আমরা তাকে আর্থিক সহযোগিতাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছি।