কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা কোনও তথ্য চাইলে তথ্য দিতে চান না । এমনকি তথ্য অধিকার আইনে নির্ধারিত আবেদন ফরমে তথ্য চাইতে গেলেও তারা আবেদনপত্র গ্রহণ করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার চিলমারী উপজেলার দুই সংবাদকর্মী উপজেলা কৃষি অফিসে তথ্য চেয়ে আবেদন দিতে গেলে আবেদন পত্র গ্রহণ না করে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক।
তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস বলছেন, তিনি অফিসের বাইরে থাকায় বিষয়টি জানতে পারেননি। অফিসের কোন কর্মচারী আবেদন গ্রহণ করেননি তা তিনি খতিয়ে দেখবেন।
ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক হলেন, চিলমারীর এস এম রাফি ও ফয়সাল হক। তারা জানান, সোমবার সকালে তথ্য অধিকার আইনের নির্ধারিত ফরমে ২০২২/২০২৩ অর্থ বছরের কৃষি প্রণোদনার কর্মসূচীর আওতায় উপজেলায় রবি মৌসুমে বীজ ও সার বিতরণের তালিকা চেয়ে আবেদনপত্র নিয়ে গেলে উপজেলা কৃষি অফিসের দায়িত্বরত অফিস সহকারী নাজিবুল ইসলাম আবেদনপত্রটি নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ওই অফিসের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নুর আলমের কাছে গেলে তিনি আবেদনটি রেখে যেতে বলেন। রিসিভ কপি চাইলে ওই কর্মকর্তা প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান।
সাংবাদিক রাফি বলেন, ‘আমরা আবেদন জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র চেয়েছি। কিন্তু দায়িত্বরত অফিস সহকারী নাজিবুল আমাদেরকে বলেন, আবেদন জমা দিয়ে যেতে পারেন তবে রিসিভ করে নেওয়া যাবে না।’
রাফি আরও বলেন,‘ তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য না পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রাপ্তি স্বীকারপত্র অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু তারা তথ্য দিতেও চান না, আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও দিতে চান না। এটা আইনের লঙ্ঘন কিনা তা কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় খতিয়ে দেখবেন।’
ভুক্তভোগী আরেক সাংবাদিক ফয়সাল হক জানান, তারা আবেদন রেখে যেতে বলেছেন। সেই সাথে এটাও জানিয়েছেন ওপরের কর্মকর্তার (কৃষি অফিসার) নিষেধ থাকায় তারা আবেদন নেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘ওই আবেদন না নেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশনা থাকায় আমি সেটি নেইনি। কর্তৃপক্ষ বলেছে, এখনও সব তথ্য আসেনি। আবেদন নেওয়া যাবে না, তাদেরকে পরে আসতে বলতে।’
তথ্য না এসে থাকলে আবেদন নেওয়া যাবে না কেন, এমন প্রশ্নে এই অফিস সহকারী বলেন, ‘ আমি হেড অব দ্যা ডিপার্টমেন্ট নই। আমাকে যা বলা হয়েছে আমি তাই করেছি।’ এরপর ব্যস্ত থাকার কথা জানিয়ে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নুর আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা কৃষি অফিসার ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে অফিসের বাইরে ছিলাম। তাই বলতে পারছি না।’ আবেদন দিলে রিসিভ কপি কেন দেওয়া যাবে না, এমন প্রশ্নে এই কৃষি কর্মকর্তা রিসিভ কপি দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘ কারা আবেদন নেয়নি সেটা তো আমার জানা নেই। কেউ আবেদন করলে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে।’