কুমিল্লা সিটি করপোরেশন কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রায় ১৩০ সদস্যদের বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
কুসিক মেয়র আরফানুল হক রিফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ. ক. ম বাহাউদ্দীন বাহার।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডিআইজি কুমিল্লায় অবথান করায় জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান পিপিএম বার উপস্থিত থাকতে না পারায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড.সফিকুল ইসলাম প্রমূখ।
আনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, আজকে আমি অনেক উদ্বেলিত। আমি যখন সিটি করপোরেশনের গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করি তখন মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বর্ধনা দেয়া হচ্ছে সিটি করপোরেশনের উদ্যেগে তা দেখে আমার প্রাণ ভরে যায়। আজ থেকে ৩৯ বছর আগে আমি এই পৌরসভার নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলাম। তখন আমিই প্রথম কোন প্রতিষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি লাগিয়েছিলাম।
পাশ করার পর যখন আমাদের নেতা কর্মীরা আমার কাছে জানতে চেয়েছিল তারা আমাকে কি উপহার দিবে। তখন আমি তাদেরকে বলেছিলাম আমাকে দুইটা বঙ্গবন্ধুর ছবি দিবেন। একটি আমি ভিক্টোরিয়া কলেজে লাগাব আর একটি আমার বাসার ড্রইংরুমে লাগাব। এমপি বাহার আরো বলেন,আমরা চার ভাই প্রত্যেকেই মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমার মনে হয় বাংলাদেশে খুব কম পরিবারই আছে যেখানে তার মা সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন। আমার মা আমাকে বলেছে যে, তোমরা ইয়াং ছেলেরা যদি ঘড়ে বসে থাকো তাহলে মুক্তিযুদ্ধ করবে কে । আমি রিফাতকে বলতে চাই তুমি কারো কাছে মাথনত করবা না। দূর্নীতির কোন প্রকার আশ্রয় নিবে না। সাক্কু অনেক ভাগাভাগি করে তার দলীয় নেতা কর্মীদেরকে নিয়ে দূর্নীতি করেছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের যেসব স্টাফরা এখনও দূর্নীতিতে জড়িত আছেন তাদের বলতে চাই আপনারও দূর্নীতি ছেড়ে দেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, আমি কুমিল্লায় যোগদান করেছি ৮ ডিসেম্বর সেদিন ছিল কুমিল্লা মুক্ত দিবস। ওটা ছিল আমার প্রথম অনুষ্ঠান। তাই আমি নিজেকে সেবাগ্যবান মনে করছি । কোন একটি দেশের এক প্রজন্মই মুক্তিযুদ্ধ করতে পারেন। পরিবর্তী প্রজন্ম তা করতে পারেন না। তাই আপনারা জাতির ও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান।
আপনারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করেছেন। জীবনে কিছু পাওয়ার জন্য আপনারা যুদ্ধ করেননি। কিছু পাওয়া তো দুরের কথা জীবন নিয়ে ফিরে আসতে পারবেন কিনা তাতেও সন্দেহ ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদেরকে সম্মানিত করছেন সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি করে ,মুক্তি যোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস দিয়ে এবং আপনাদের ইন্তেকালের পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করে । আপনারা যুদ্ধ করে আমাদেরকে একটি স্বাধীন দেশ উপহার না দিলে আজ আমি এখানে দাড়িয়ে কথা বলতে পারতাম না।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম বলেন জাতির পিতা ও তার পরিবার ও শহীদ মুক্তি যোদ্ধা দোর স্মরন করছি। যেসকল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজের জীবনের মায় ত্যাগ করে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন তাঁরা জাতির সূর্য সন্তান। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাদের ও পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দিতে পেরে গর্ববোধ করি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন বলেন, আমি গর্ববোধ করছি এজন্য যে আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সংর্বধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে। স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রিমহল এখন দেশের স্বার্বভৌমত্তকে নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কুসিক মেয়র আরফানুল হক রিফাত বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহন করে দেশকে স্বাধীন করেছেন আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে
আপনাদেরকে সম্মান জানাই।
খুব তারাতাড়ি আমরা সিটি করপোরেশনের জন্য নতুন ভবন তেরি করব । ভবিষ্যতে আরও বড়সরে যেন সিটি করপোরেশন থেকে আপনাদের আরও বড় ধরনের সংর্বধনা দিতে আপনারা দোয়া করবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাের মধ্যে আলোচনা করেন, বীর মুক্তি যোদ্ধা পিপি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহাউদ্দিন রেজা বীর প্রতিক যোদ্ধাহত,বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান, নারী মুক্তি যোদ্ধা পাপরি বসু, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক কাজী আবুল বাশার প্রমূখ। প্যানেল মেয়র হাবিব আল আমিন সাদী,জেলা পরিষদের সদস্য আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ এবং সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরগন উপস্থিত ছিলেন।
