✍️ ২৬৬ শিক্ষকের মধ্যে ছুটিতে রয়েছেন ৬৫ জন
✍️ আন্তজার্তিক মানদণ্ডের ধারে কাছেও নেই কুবি
✍️ মানদণ্ড বজায় রেখে শিক্ষক নিয়োগ দিতে ইউজিসি এবং মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ উপ-উপাচার্যের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বর্তমান শিক্ষকের সংখ্যা ২৬৬। এর মধ্যে শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন ৬৫ জন। অর্থাৎ প্রতি চার শিক্ষকের একজন শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ প্রকাশিত ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষকরা বিদেশে অবস্থান করলে প্রতিষ্ঠানে তাঁকে অনুপস্থিত দেখানো হয় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ইউজিসির প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ হাজার ৩৮৪ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ২৬৬ জন। অর্থাৎ প্রতি ২৪ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক আছেন একজন করে। তবে মোট শিক্ষার্থীর বিপরীতে দায়িত্বরত শিক্ষকের সংখ্যা হিসাব করলে এ অনুপাত দাঁড়ায় প্রতি ৩২ শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিক্ষার মান ধরে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন করে শিক্ষক থাকার কথা বলা হয়েছে। সে অনুসারে আন্তজার্তিক মানদণ্ডের ধারে কাছেও নেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদের মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদের মোট ৫টি বিভাগে ২৩ জন, কলা ও মানবিক অনুষদের ২টি বিভাগে ৬ জন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৫টি বিভাগে ১৪ জন, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ৪টি বিভাগে ১৩ জন, প্রকৌশল অনুষদের ২টি বিভাগে ৯ জনসহ মোট ৬৫ জন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে আছেন।
এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বাইরে কুবির ১৪ বিভাগ। মানদণ্ড ধরে রেখেছে ৫বিভাগ। সবচেয়ে সূচনীয় অবস্থায় রয়েছে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ও ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগ। মানদণ্ডে ধরে রেখে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে পদার্থবিজ্ঞান ও পরিসংখ্যান বিভাগ।
শিক্ষক সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, প্রথমত আমাদের শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়াতে একাডেমিক কাজগুলো প্রোপারলি করা যায় না। সবকিছু লোড নেওয়ারও ক্ষমতা থাকে না। দ্বিতীয়ত আমার এমন একটি বিষয় পড়াতে হচ্ছে যেটাতে আসলে আমার আগ্রহ নাই, আমার নিজেরও কোনো কাজকর্ম নাই। যদি শিক্ষকের অনুপাতটা প্রোপারলি হতো তখন এ সমস্যাগুলো হতো না।
রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক সংকট নিরাসনে ইতোমধ্যে উপাচার্য স্যার ইউজিসিকে চিঠি পাঠিয়েছেন। আশা করি এই সংকট দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রথম এবং প্রধান শর্ত হচ্ছে শিক্ষকের পর্যাপ্ততা। যোগ্য শিক্ষক ছাড়া আমরা কখনো গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারবো না। গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্যই আমাদের শিক্ষকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আমরা বারবারই ইউজিসিকে শিক্ষকের পদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করেছি। ইউজিসি থেকে যা দেওয়া হচ্ছে, তা অপর্যাপ্ত।
উপ-উপাচার্য আরও বলেন, ইউজিসি এবং মন্ত্রণালয় পদ না দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কাউকে নিয়োগ দিতে পারবে না। গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতেই ইউজিসির উচিৎ প্রয়োজনীয় শিক্ষক সংখ্যার অনুমোদন দেওয়া।