বরগুনার আমতলীর হলদিয়া বাজারে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি একাধিক মামলার আসামী নারী নির্যাতনকারী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ সবুজ ম্যালাকার (৩০)সোমবার রাত সাড়ে ৯টার সময় এঘটনা ঘটে। এসময় সবুজ বাহিনীর হামলায় আরো ৩ জন আহত হয়েছে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের তথাকথিত সহ-সভাপতি সবুজ ম্যালাকার হলদিয়া বাজারে একটি ঘর দখল করে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হলদিয়া গুরুদল, উত্তর তক্তাবুনিয়াসহ আশপাশের এলাকায় তরমুজ চাষী এবং ব্যাবসায়ীদের জিম্মি করে ব্যাপক ভাবে চাঁদাবাজি করছে। তাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসী ও তরমুজ চাষীরা সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার সময় তাদের ঘেরাউ করে গণপিটুনি দেয়।
গনপিটুনিতে সবুজ ম্যালাকার (৩০) আহত হয়। এসময় তার সাথে থাকা মহিষডাঙ্গা গ্রামের আবুল সর্দারের ছেলে সন্ত্রাসী কাদের সর্দার (৩৫) বাহিনী পাল্টা হামলা করে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এ্যাডভোকেট আরিফুল হাসান আরিফ (৩৮), রাকিবুল ইসলাম (১৮), শাহিন (৩৫) ও শাহেদ আবদুল্লাহ আরিফ (২৫) আহত হয়।
গণপিটুনির শিকার সবুজ ম্যালাকারকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসার জন্য ওই রাতেই তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। অন্যদের আমতলী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
অ্যাডভোকেট আরিফ উল হাসান আরিফ বলেন,সবুজ ম্যালাকার ১০-১২ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হলদিয়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষীদের জিম্মী করে চাঁদা আদায় করছে। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গণপিটুনি দিয়েছে। রাতের বেলা আমি আমার গ্রামের বাড়ি যাওয়ার সময় জটলা দেখে দাড়ালে সবুজ ম্যালাকার এবং তার বাহিনী আমার উপরও হামলা করে। হামলায় আমার হাত ভেঙ্গে গেছে।
হলদিয়া গ্রামের তরমুজ চাষী বাসুদেব শীল জানান,৪/৫ দিন পূর্বে সবুজ ম্যালাকার আমার নিকট ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছে সোমবার রাতে আমি হলদিয়া বাজারে আসলে সবুজ মালাকার আমাকে আটক করে মারধোর করা শুরু করে তখন এ পথ দিয়ে অ্যাড: আরিফ উল হাসান আরিফ বাড়ী যাচ্ছিলেন আমাকে মারধোর করার কারন জানতে চাইলে সবুজ মালাকার ও তার সাথে থাকা সন্ত্রাসীরা অ্যাড: আরিফ উল হাসানের উপর হামলা করে তার হাত ভেঙ্গে ফেলেন। তখন স্থানীয় জনগন সবুজ মালাকারকে গন ধোলাই দেন।
দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের তরমুজ চাষী আলামিন শরীফ বলেন, সবুজ ম্যালাকার আমার নিকট থেকে জোর করে ৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে।
হলদিয়া গ্রামের এখলাশ প্যাদা বলেন, তরমুজ বিক্রি করার আগে সবুজ ম্যালাকার আমার নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে।
হলদিয়া গ্রামের আরেক তরমুজ চাষী খালেক মোল্লা বলেন সবুজ ম্যালাকার তার নিকট ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেছে। টাকা না দিলে তার তরমুজ বিক্রি করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়।
এলাকাবাসী জানান, সবুজ মালাকার ও কাদের সর্দার উপজেলার মহিষডাঙ্গা ও হলদিয়া গ্রামে দীর্গদিন যাবৎ নীরব চাদাবাজি করে যাচ্ছেন। তরমুজ চাষীরা তরমুজের সিজন শেষ না না হওয়া পর্যন্ত মহিষডাঙ্গাও হলদিয়া গ্রামে পুলিশের কটোর নজরদারী করার জন্য পুলিশের আইজি, ডিআইজি ও বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার ও আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
কৃষক ও গ্রাম বাসিরা সন্ত্রাসী সবুজ মালাকার ও কাদের সর্দারসহ সকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের উচ্চমহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে হলদিয়ার শতশত গ্রামবাসী ও তরমুজ চাষীরা সন্ত্রাসী সবুজ মালাকার ও কাদের সর্দার বাহিনীর বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এ বিষয় সবুজ মালাকারের বক্তব্যর জন্য তার মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি এ বিষয় কথা বলবেন না বলে জানান।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মিজানুর রহমান বলেন, চাঁদাবাজির কারনে গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, সবুজ ম্যালাকারের বিরুদ্ধো চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।