খুলনা জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অমান্য করে খুলনা জেলার পাইকগাছা পৌরসভা বাজারস্হ স্বর্নপট্টি মার্কেট নামে পরিচিত জেলা পরিষদের মার্কেটের পাটিশান ওয়াল ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার প্রভাবশালী স্বর্ন ব্যবসায়ী পিয়া জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারি মহিতোষ কুমার দত্ত’র বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে তদন্তে ও স্হানীয় ব্যবসায়ী সুত্রে জানা যায়,দীর্ঘ ৩ যুগ পূর্বে খুলনা জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ পাইকগাছা বাজারস্হ খুলনা জেলা পরিষদের পতিত জায়গায় একটি মার্কেট নির্মান করে। এ মার্কেটের বরাদ্দকৃত ঘর মালিকদের কাছ থেকে ঘর ভাড়া নিয়ে পশ্চিম পার্শে স্বর্ন ব্যবসায়ীরা এবং পূর্ব পাশে হার্ডওয়ার, সেলুন ও ওষধ ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্হা করে আসছেন। মার্কেটের পশ্চিমপার্শে ঘর গুলোতে স্বর্ন ব্যবসায়ীদের আধিপত্ত থাকায় মার্কেটটি স্বর্ন পট্টি নামে পরিচিত। এ মার্কেটের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালি ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বর্ন ব্যবসায়ী মহিতোষ কুমার দত্ত অন্যতম।ব্যবসায়ী মহিতোষ তার ভাড়া নেওয়া দোকান ঘরের বিপরীত পার্শ্বে দীর্ঘদিন ধরে হার্ডওয়ার ব্যবসা পরিচালনাকারি তাপস কুমারের ভাড়া নেওয়া ঘরটি ঘর মালিক কে অগ্রিম মোটা অংকের টাকা দিয়ে এবং মাসিক ৩হাজার টাকা চুক্তিতে নিজের দখলে নিয়েছে বলে জানান স্হানীয় ব্যবসায়ীরা। এ সময় তারা আরো জানান,গত ২৩মার্চ (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে মহিতোষ দু’ঘরের মাঝখানের পাটিশান দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলেছে।
পরদিন সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্হানীয় প্রশাসন মহিতোষ কে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু মহিতোষ তার কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। তবে যেহেতু মার্কেটটি জেলা পরিষদের সেহেতু জেলা পরিষদের কোন অনুমতি ছাড়া এ মার্কেটের কোন ওয়াল ভাঙ্গা কিংবা গড়ার কাজ আইনগত ভাবে বৈধ নয় বলে ও জানান তারা। কিন্তু ঘরের পাটিশন ওয়াল ভেঙ্গে ঘরের কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি পাইকগাছা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমান রঞ্জুর অনুমতির কথা বললেও এ জনপ্রতিনিধি এ ব্যাপারে কোন অনুমতি দেননি বলে জানিয়েছেন। বর্তমানে এ ঘটনায় স্হানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে বলে বাজার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।সর্বোপরি এ ঘটনায় স্হানীয় ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে প্রশ্ন তুলেছেন তাহলে প্রভাবশালি ব্যবসায়ী মহিতোষ কি আইনের উদ্ধে?
এ ঘটনায় স্বর্ন ব্যবসায়ী মহিতোষ কুমার দত্ত জানান,আমি আমার ব্যবসার সুবিধার্থে কারখানা নির্মানের জন্য ঘর মালিকের কাছ থেকে ঘর ভাড়া নিয়ে দুই ঘরের মাঝখানে দরজা করার জন্য শুধুমাত্র পাটিশান ওয়াল ভেঙ্গেছি । আর আমি পাইকগাছা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমান রঞ্জুর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে কাজ করছি।তিনি বলেছেন কাজ করো কোন সমস্যা নেই বলেও জানান ব্যবসায়ী মহিতোষ।
এ বিষয়ে হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী তাপস কুমার অভিযোগ করে বলেন,প্রভাবশালি স্বর্ন ব্যবসায়ী মহিতোষ তার ব্যবসার সুবিধার জন্য আমার ভাড়া নেওয়া ঘরটির দিকে নজর দেয়।পরবর্তীতে আমার ঘর মালিককে অগ্রিম মোটা অংকের টাকা দিয়ে ও মাসিক ৩হাজার টাকা চুক্তিতে ঘর ভাড়া নিয়ে দুই ঘরের মাঝখানের পাটিশান দেওয়াল কোন অনুমতি ছাড়া ভেঙ্গে ফেলেছে।যেটা সম্পূর্ন অবৈধ। এ ঘটনা নিয়ে বর্তমানে বাজার ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ষোলআনা ব্যবসায়ী সমিতি লিঃ এর সভাপতি মোঃ শুকুরুজ্জামান জানান,স্বর্ন ব্যবসায়ী মহিতোষ স্বর্ন পট্টিতে তার ঘরের বিপরীত পার্শ্বের ঘরের পাটিশন ওয়াল ভাঙ্গছ এমন খবর পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ঘরের পাটিশান ওয়াল ভাঙ্গার কাজ বন্ধ করা মাত্রই মহিতোষ মুঠোফোনে আমাকে জানায়।ঐ সময় মহিতোষ আরো জানায়, বিষয়টি আপনাকে জানিয়ে রাখলাম আর প্রয়োজন হলে আপনাকে ডাকবো।
পাইকগাছা জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি মধু রঞ্জন কর্মকার জানান,আমি বাহিরে থাকায় এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
পাইকগাছা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমান রঞ্জু বলেন,পাইকগাছা উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি আমাকে জানানো মাত্রই আমি ঘটনা স্হলে পৌছে স্বর্ন ব্যবসায়ী মহিতোষ কে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলি তবে তাকে কাজ করার কোন অনুমতি দেইনি।
খুলনা জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ রবিউল ইসলাম গাজী বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই এবং এ বিষয়ে কেউ আমাকে জানায় নি।
খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম. মাহমুদুর রহমান(উপ সচিব)বলেন,পাইকগাছা বাজারস্হ স্বর্নপট্টি মার্কেট নামে পরিচিত জেলা পরিষদের মার্কেটের পাটিশান ওয়াল ভাঙ্গার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং এ ব্যাপারে মহিতোষ নামে কোন স্বর্ন ব্যবসায়ী আমাদের কাছে আবেদন করেননি।