-আমি আসবো না, তবুও তুমি দাঁড়িয়ে থাকবে!
-কাঁন্না মিশ্রিত কণ্ঠে ইচ্ছে প্রশ্ন করলো- কেন?
-শোনো, আমাদের ভালোবাসা তোমার শহরের ধুলো,গন্ধযুক্ত ইট-পাথরের সৌন্দর্যের মাঝে হারিয়ে গিয়েছে। হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসাকে স্মরণ রাখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে।
-আমাকে মাপ করে গ্রহন করা যায় না?
– বিশ্বাস করো ইচ্ছে তোমাকে আমি মাপ করে দিয়েছি। কিন্তু.
– কিন্তু কি!! বলো, দয়া করে বলো।
– কিন্ত তোমাকে দেখলে বারবার একটা কথা মনে পরে।
– কি কথা।
– থাক বাদ দেও,যা হবার হয়ে গিয়েছে, সেটা না বলাই উত্তম।
– আমার ভালোবাসার অনুরোধ, বলো?
– তুমি ২৫ অক্টোবর ব্রিজের নিচে কেনো দাঁড়িয়ে থাকলে,যদি না থাকতে তা হলে আজ আমি সবার সামনে মাথা উঁচু করে চলতে পারতাম, কারো সামনে ছোট্ট হওয়ার প্রয়োজন ছিলো না।
– ইচ্ছে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েটা এম্নেই কোনো কিছু বললে শুধু শোনবে।কি বলবে ইচ্ছে ভাবতেছে।আমিও ভাবতে সময় দিলাম।এর ভিতরে আমার মনের কিছু কথা বলতে লাগলাম।
– ইচ্ছে শোনো?
– মাথা তুলে, হুম।
– কাঁন্না করো না, তোমাকে কান্না করতে দেখলে আমার খুব খারাপ লাগে।তুমি একদিন বলেছিলে তোমার আম্মু তোমাকে মেরেছে, সেদিন কথাটা শুনে আমার খুব খারাপ লাগছে। তুমি কলেজে জরিয়ে ধরে কথাটা বলেছিলে।বিশ্বাস করো আমার খুব ইচ্ছে করছিলো তোমাকে জরিয়ে ধরে একটু শান্তনা দেই।আমিও একটু কাঁদি।কিন্তু তোমার ভুলের কারনে আমি সেদিন কিছুই করতে পারি নি।
– ইচ্ছে কাঁন্না করে বললো,আমি না হয় একটু বোকা আছি তাই বলে তুমি আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দিবে না।
– কি ভাবে দিবো বলো,আচ্ছা ইচ্ছে তুমি এখন বলোতো, কিসে পড়ো?
– অনার্সে।
– তা হলে তুমি ভাবো তোমাকে কি বোঝাবো। তোমার মতো এ বয়সের মেয়েরা দু-তিনটা বাচ্চার মা।
– তারপরও।
– তারপরও যে আমার পক্ষে সম্ভব ছিলো না।
– তুমি কি চলে যাবে।
– যেতে হচ্ছে ইচ্ছে, যেতে হচ্ছে ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও।
– তোমাকে তো কেউ কিছু বলছে না।
– তা ঠিক, কিন্তু পিছনে পিছনে সবাই অনেক কিছু বলতেছে।আর তাছাড়া এ শহরে আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে।
– প্লিজ তুমি যেও না।
– আমার এখন যেতে হবে।
– আর আসবে না
– আসবো, শুধু পরিক্ষাগুলো দিতে আসবো।
– তা হলে আমাদের সম্পর্ক শেষ
– একটু ভেবে ইচ্ছে কে বললাম, সম্পর্ক শেষ বা শুরু কিছুই বলতে পারবো না। শুধু ২৫ অক্টোবর দিনটা তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করিও।দেখা হবে প্রতি বছর।তারপরও যদি প্রশ্ন করো, কেনো? তবে, দাঁড়াবার দরকার নেই।