মাহফিল কমিটি ভাইরাল বক্তার পেছনে দৌঁড়াচ্ছে

রাজধানী টাইমসের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ। ইসলাম ধর্মের প্রতি এদেশের সাধারণ মানুষের আবেগ এবং ভালোবাসা সর্বোচ্চ। বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইসলামিক আলোচনা হয় যেখানে মানুষের উপস্থিতি থাকে সর্বোচ্চ। বছরের এই সময়টা (শীত) চারপাশে ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

প্রযুক্তির বদৌলতে এখন ইসলামিক সকল আলোচনা খুব সুন্দরভাবে ইউটিউব সহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় পাওয়া যায়। তাই আগের তুলনায় ওয়াজ-মাহফিলে মানুষের উপস্থিতি কমেছে। তবে এখনো ইসলাম প্রিয় মানুষের বৃহৎ একটা অংশ অনেক দূরদূরান্তে এবং আশেপাশে ওয়াজ-মাহফিল হলে শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত থাকে।

স্বাভাবিকভাবেই সবার ইচ্ছে থাকে মাহফিলে গিয়ে ধর্মীয় বিষয় গুলো জানবে, নিজের ছোটখাটো ভুলগুলো সংশোধন করবে

বিজ্ঞাপন

বক্তার ওয়াজের মাধ্যমে। পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজনকে শেখাবে এবং ইসলামের নিয়মকানুন অনুসারে নিজেদের জীবনব্যবস্থ গড়ে তুলবে।

ওয়াজ মাহফিল হলো ইসলামিক আলোচনার একটা জলসা। যেখানে বিভিন্ন যায়গা থেকে বক্তার আগমন ঘটে। মানুষ দেখতে ও ভীড় করে ওয়াজিনদের (বক্তা)। তাদের প্রতি আলাদা সম্মান, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা কাজ করে স্থানীয় জনগণের। সরলভাবে বললে ইসলামের যে সৌন্দর্য এবং এর প্রতি কেন মানুষের এতো বিশ্বাস, ভালোবাসা এই বিষয় গুলো জানান দেওয়ার একটা মাধ্যম ওয়াজ-মাহফিল। যেখানে বক্তারা তুলে ধরবেন ইসলামিক আদর্শ এবং এর রীতিনীতি। তাদের আলোচনায় মুগ্ধতা ছড়াবে সকলের মধ্যে এটাই প্রত্যাশা থাকে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের।

তবে বর্তমান সময়ে ওয়াজিনের পরিমাণটা বাড়ছে ভয়াবহ ভাবে। এখন সুনামধন্য হতে জ্ঞান লাগছে না। কোন কারনে ভাইরাল হলেই চলে। ভাইরাল বক্তা মানেই ওয়াজের মাঠ গরম। এর ফলে যেটা হচ্ছে মানুষজন বেশি হচ্ছে। যার ফলে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে মাহফিল কমিটির আয়োজকরা।

বিজ্ঞাপন

এমন অযোগ্য বক্তারা দিনশেষে আলোচনা- সমালোচনার মুখোমুখি করছে ইসলামকে।

ওয়াজ চলাকালীন বক্তাদের নানান আলোচনা এবং অশালীন অঙ্গভঙ্গী সাধারণ শ্রোতাদের মনঃক্ষুণ্ন করে। যেই বিষয় গুলো কুরআন হাদিসে নেই সেগুলো নিয়েই তাদের আলোচনা বেশি। একেক বক্তা একেক রকম উদ্ভট জিকির করে। যেগুলো দিয়ে পরবর্তীতে গান সহ বিভিন্ন হাস্যরসাত্মক ভিডিও বানানো হয়।

ইসলাম তো সুন্দর জীবনব্যবস্থা। এখানে কাউকে কটাক্ষ করার যায়গা নেই। কিন্তু যখন ইসলামের এই আলোচিত ব্যক্তিরা এভাবে বিভিন্ন যায়গায় সুযোগ নিয়ে ইসলামকে হাস্যরসের সৃষ্টি করে তখন দুঃখ বৈকি। যাদের থেকে সাধারণ মানুষ শিখবে, জানবে তাদের যদি এই অবস্থা হয় তবে খুবই দুঃখজনক।

দেখা যায় এক বক্তার ওয়াজ নিয়ে আরেক বক্তা আবার মাঠ কপিয়ে সমালোচনা করছে বিভিন্ন অশালীন ভাষায়। মানে বক্তাদের মধ্যে বিশাল একটা বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে এসব আলোচনাকে কেন্দ্র করে। যাদের কাজই হলো একজন আরেকজনকে কটাক্ষ এবং হেয়প্রতিপন্ন করে কথা বলা। আর এই সুযোগে এসব বক্তব্য নিয়ে যে যেভাবে পারছে ট্রল করছে ফেসবুক, ইউটিউবে। দিনশেষে ইসলামের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।

ইসলামিক আলোচনার মাধ্যমে মাহফিল আয়োজক কমিটি টাকা উঠায় এটা সবাই কমবেশি জানি। সেটা হতে পারে মাদরাসা এবং মসজিদ চালানোর জন্য। কিন্তু বর্তমান সময়ে মাহফিল কমিটির বৃহৎ একটা অংশ টাকার জন্য কতটা নিচে নামছে একবার ভাবছে না। ইচ্ছে করেই এসব বিতর্কিত ওয়াজিন আনছে।

দিনশেষে যেটা হচ্ছে বক্তার ইসলাম নিয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় ইচ্ছেমতো কোরআন হাদিসের দলিল দিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা বানোয়াট উদ্ভট বানী শুনিয়ে সাধারণ মানুষকে একটা ঘোরের মধ্যে ফালায়। ফলস্বরূপ যেটা হচ্ছে সাধারণ মানুষ এতো প্যাচগোচ বুঝেনা। যাই বলে জ্বি জ্বি বলে সম্মতি দিয়ে দেয়। দিনশেষে তাদের আমলনামা শূন্যের খাতায়। আবার এগুলো নিয়ে মাঝেমধ্যে মাহফিলের ময়দানেই মারামারি শুরু হয়ে যায়। যার ফলাফল খুবই বিপদজনক হতে পারে।

ওয়াজ-মাহফিলের অবস্থা যদি এমন হয় তবে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? স্বাভাবিকভাবেই ইসলাম ধর্মের রিতীনিতি সাধারন মানুষ ইসলামিক এই বক্তাদের মাধ্যমে জানবে শুনবে। অথচ সেখানে যদি প্রতিনিয়ত এভাবে ইসলামকে ছোট করা হয়, ইসলামকে হাসির ক্ষেত্র হিসেবে তৈরি করা হয় তবে এর ফলাফল কি? ডিজিটাল যুগে যা বলে সবকিছু অনলাইনে চলে আসে। কিন্তুু এসব ওয়াজিনরা তাদের মুখের লাগাম টানছে না। বন্ধ করছে না তাদের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী। যেটা ইসলামের জন্য ভয়াবহ এক মর্মান্তিক ঘটনা।

সহজভাবে বললে এমন কিছু অযোগ্য বক্তারা ইসলামকে বা ওয়াজ মাহফিলের এই সুন্দর জলসাকে রীতিমতো সিনেমার আসর বানিয়ে দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য মানুষকে হেদায়েতের পথে না। তাদের উদ্দেশ্য মানুষকে দ্বিধাদ্বন্দে ফালানো এবং নিজের আখের গোছাতে ভুরিভুরি টাকা নেওয়া। এটাও সত্য মাহফিল কমিটির বৃহৎ একটা অংশের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ওয়াজের নামে টাকা উঠানো। সেটা যেমন বক্তা বা আলোচক দিয়েই হোকনা কেন! যেটা কখনোই কাম্য নয়।

সুতরাং এখনই সময় এমন অযোগ্য বক্তা দিয়ে ওয়াজ বন্ধ করার। পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উচিত হবে খুব শক্ত হাতে এসব বিষয় গুলো মোকাবেলা করা যেন কোন অযোগ্য বক্তা ওয়াজের মাঠে আসতে না পারে। এবং সমগ্র দেশ থেকে খুঁজে বের করতে হবে কারা ওয়াজের নামে পরিবেশ নষ্ট করে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ঐক্য নষ্ট করে । এবং মাহফিল কমিটির উচিত হবে বক্তাকে নির্দিষ্ট বিষয় অনুসারে ওয়াজ করতে বাধ্য করা। যেন লাগামহীন আলোচনা না করে সুনির্দিষ্ট কোন একটা বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে জ্ঞানের একটা যায়গা করে দিতে পারে।

ওয়াজ মাহফিল হোক ইসলামের বার্তা পৌছানোর অন্যতম একটা জলসা এটাই প্রত্যাশা।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল rajdhanitimes24.com এ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয়- মতামত, সাহিত্য, ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার ছবিসহ লেখাটি পাঠিয়ে দিন rajdhanitimes24@gmail.com  এই ঠিকানায়।

শীর্ষ সংবাদ:
ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষকের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বৃষ্টির জন্য সালাতুল ‘ইসতিসকার’ নামাজ ও বি‌শেষ দোয়া বাণিজ্যিকভাবে আঠাবিহীন বারোমাসি কাঁঠাল চাষে ভাগ্য খুলেছে সবুজের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বৃত্তে আটকা ভোলার জনজীবন! একদিনের ব্যবধানে আবারও কমলো সোনার দাম মোবাইলে ডাটার মেয়াদ চায় না ৯৮ শতাংশ মানুষ এফডিসিতে মারামারি, বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত গাজীপুরে বৃষ্টি প্রার্থনায় ইসতিকার নামাজ আদায় লালমোহনে আবাসনের ঘর জবরদখলের অভিযোগ রাজশাহীতে পদ্মায় গোসলে নেমে তিন শিশুর মৃত্যু বাগেরহাটে দোকান ঘর ভেঙ্গে খাদে পরিবহন, নিহত ১ নবীনগরে চলে না ১ টাকা ও ২ টাকার কয়েন! উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী ড্রামের ভোজ্যতেল ব্যবহারের প্রতিবাদে বাগেরহাটে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি কলাপাড়ায় গ্রামে গ্রামে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব সিলেটে গরমে বেড়েছে জ্বর, ডারিয়া ও হিটস্ট্রোক তীব্র তাপদাহে পুড়ছে সাতক্ষীরা জবি রঙ্গভূমির সভাপতি ইব্রাহিম, সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক নিয়ামতপুরে সিলিং ফ্যানে ঝুলছিল কলেজ ছাত্রীর মরদেহ কালীগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় ও ট্রেনে কাটা পড়ে ২ জনের মৃত্যু