শেখ সাখাওয়াত হোসেন পাবনা (জেলা) প্রতিনিধি
পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরে স্কুলছাত্রী (১৫) কে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই অভিযোগে শিশু বয়সী একজনকে পাঁচ বছরের আটকাদেশ এবং অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন শিশুকে খালাস দেয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, আমিনপুর থানার ভবানীপুর গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে সজিব হোসেন (২২), সম্মু কর্মকারের ছেলে সুমন কর্মকার (২৪), কুদ্দুস মণ্ডলের ছেলে ইমন মণ্ডল (২৬) ও খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদের ছেলে খন্দকার জোসেফ (২৬)। পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হলেন, একই থানার কদিমালঞ্চি গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে নাহিদ হাসান (২২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী রাজধানীর মিরপুরের একটি স্কুল থেকে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ওই বছরের মার্চ মাসে করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে ঢাকা থেকে পাবনার আমিনপুর থানার ভবানীপুর গ্রামের বাড়িতে আসেন তার বাবা-মা। গ্রামে থাকাবস্থায় মুঠোফোনে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় একইগ্রামের নাহিদ হাসানের। বিভিন্নভাবে মেয়েটিকে উত্যক্ত ও প্রেমের প্রস্তাব দিতো নাহিদ। প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হওয়ায় ওই বছরের ৭ জুন রাতে শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে নাহিদ ও তার অন্যান্য সহযোগীরা স্কুলছাত্রীর হাত-মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গোঙানির শব্দ শুনে তার বাবা-মা এসে মেয়ের ধর্ষণের কথা জানতে পারেন।
ওই ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে একই বছরের ১৩ জুন আমিনপুর থানায় ৬ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩ থেকে ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর দীর্ঘ শুনানি ও ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণা করেন আদালত।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সজিব হোসেন, সুমন কর্মকার, ইমন মণ্ডল ও খন্দকার জোসেফকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং শিশু আদালতে নাহিদ হাসানকে ৫ বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট খন্দকার আবদুর রকিব সন্তোষ প্রকাশ করলেও, অসন্তোষ প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান আলী মণ্ডল।