জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটেরিয়া’ চক্রবাক কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া’ তে পবিত্র রমজানের সেহরিতে গরুর মাংস পরিবেশন করতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা মোড়ে মানববন্ধন করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে ডাইনিং এবং ক্যাফেটেরিয়া পরিচলায় দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়ীকতার অভিযোগও করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন রকম ধর্মীয় গোঁড়ামি চলবে না। সব ডাইনিং এবং ক্যাফেটেরিয়াতে গরুর মাংস সহ সবধরনের খাবার রাখতে হবে। অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা ব্যাবস্থা করতে হবে।এসম প্রশাসনকে দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আহবান জানান তিনি।
জানাগেছে বৃহস্পতিবার রাতে পবিত্র রমজানের প্রথম সেহরির খাবারের মেনুতে গরুর মাংস রান্না করে ক্যফের দায়িত্বরতরা। কিন্তু সে মাংস শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিবেশন করার আগেই ক্যাফে পরিচালনার সাথে জড়িত শিক্ষকদের নির্দেশে গরুর মাংস সরিয়ে নিতে হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্রপ্রতিকৃয়া দেখা গেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রমজানে ভালোমন্দ খাওয়া খুবই জরুরী। গরুর মাংস পরিবেশন করতে না দেওয়াটা দুঃখজনক।
আরেক শিক্ষার্থী শিপ্রা রয় মনে করেন, ক্যাফেটেরিয়ায় বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীরা খাবার খায়,এখানে এমন খাবার রান্না না করায় উত্তম যেটা অন্যদের জন্য অসুবিধা হবে।
আবার ক্যাফেটেরিয়া পরিচলনা কমিটির সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফ উদ্দিন বলেন, কমিটি সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে একই সাথে সেহেরিতে গরুর মাংস রান্না এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা ব্যাবস্থা করতে পারতো।
এ বিষয় জানতে চাইলে ক্যাফের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বরত ম্যানেজার জনাব ফরহাদ জানান, গত পাঁচ বছর ধরে ক্যাফেতে গরুর মাংস রান্না করা হয় না। রমজান উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনুরোধে সেহেরিতে গরুর মাংস রান্না করেন তিনি। কিন্তু খাবার পরিবেশন করার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল শিক্ষকদের নির্দেশে মাংস সরিয়ে নেওয়া হয়। এ মাংস বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। মাংস রান্না করার পর বিক্রি করতে না পারায় তার পাঁচ হাজারের বেশি লস হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীল, চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মোহাম্মদ ফখর উদ্দিন (দ্রাবিড় সৈকত) বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটেরিয়া এটি।এখানে সব ধর্মের শিক্ষক – শিক্ষার্থীরা খাওয়া দাওয়া করে।আর কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় গরুর মাংস পরিবেশন না করাটা এখানকার রেওয়াজ।আমরা নতুন কোন নিয়ম চালু করি নাই।
কারো কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য থাকলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলোমেলো কথা না বলে ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা কমিটির সাথে কথা বলার আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের ডাইনিং এবং কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা কমিটির যৌথ আলোচনায় মাধ্যমেই এরকম রেওয়াজ চলে আসছে।