বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে ছাত্রলীগের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। অবৈজ্ঞানিকভাবে পাক-ভারত বিভাজনের কিছুদিন পর ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে বাংলার মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।
ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিলো দেশের মেধাবী তরুণ সমাজকে দেশপ্রেমে উদ্ভুদ্ধ করতে এবং দেশ গঠনে ভূমিকা রাখার জন্য। সূচনালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত ছাত্রলীগ দেশের প্রয়োজনে যেকোনো সংকটে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যাত্রা, গণ অভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ওয়ান ইলেভেনে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে কারামুক্তির জন্য আন্দোলন সহ দেশের ক্রান্তিলগ্নে ছাত্রলীগ ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
ইতিহাসের ক্ষনে ক্ষনে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়া নেতারা পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বর্তমান শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতৃবৃন্দের রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিল ছাত্রলীগের হাত ধরে।
৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কিছুদিন পূর্বে দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠনটির নতুন কমিটি ঘোষণা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে ছাত্রলীগ অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে আশা করি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজনীতি করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আবার সময়ের প্রয়োজনে নেতাকর্মীরা হয়ে যায় স্বেচ্ছাসেবক। গত করোনা মহামারীতে যখন কেউ লাশ দাফন করতে ভয় পেতো তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাধে কাধ মিলিয়ে লাশ দাফন করেছেন, ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্য, অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরেছেন এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি।
বর্তমান স্মার্ট বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
দেশের প্রতিভাবান তরুণদের সিংহভাগ তরুণ ছাত্রলীগের প্রতিনিধিত্ব করে; এই সম্ভাবনাময় তরুণদের রাজনীতির পাশাপাশি সাহিত্যচর্চা, বিজ্ঞানচর্চা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন, কারিগরি শিক্ষা প্রদান করলে দেশের উন্নয়নে প্রত্যক্ষ অবদান রাখতে পারবে ছাত্রলীগ। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের পর নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দক্ষ হওয়া ভিন্ন অন্য কোনো পথ নেই।
জাতির পিতার হাতেগড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আজ ৭৫ টি বছর অতিক্রম করছে।আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে স্ফুলিঙ্গ হয়ে থাকা নক্ষত্র বাংলাদেশ ছাত্রলীগের হাত ধরে এগিয়ে যাক প্রিয় মাতৃভূমি।
শিক্ষা,শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠনটি বিদ্যার সঙ্গে বিনয়,শিক্ষার সঙ্গে দীক্ষা, কর্মের সঙ্গে নিষ্ঠা, জীবনের সঙ্গে দেশপ্রেম এবং মানবিক গুণাবলির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে এগিয়ে চলুক কোটি তরুণের আলোর দিশারী হয়ে, এই প্রত্যাশা।
মেহেদী হাসান মিলু
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।