রাজশাহীতে অধ্যক্ষকে ১৫ মিনিট ধরে পেটালেন এমপি

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on pinterest
Share on print
সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী এক কলেজ অধ্যক্ষকে পিটিয়ে জখম করেছেন। প্রায় ১৫ মিনিট সময় ধরে সবার সামনে তিনি ওই অধ্যক্ষকে পেটান। ওই অধ্যক্ষের নাম সেলিম রেজা। তিনি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। এমপি ফারুক চৌধুরী তার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে ডেকে নিয়ে বেপরোয়াভাবে লাথি, কিল-ঘুসি ও হকি স্টিক দিয়ে পেটান। যার আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ওই অধ্যক্ষ নিজ বাসায় আছেন। তবে তিনি লজ্জা ও আতঙ্কে কোথাও অভিযোগ করেননি। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহ্বল ও আতঙ্কিত ওই শিক্ষক এখনো ভীতসন্ত্রস্ত্র। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গত ৭ জুলাই রাতে নগরীর নিউমার্কেট সংলগ্ন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মালিকানাধীন ওমর থিম প্লাজার এমপির চেম্বারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন কলেজের আরও সাতজন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ১৫ মিনিট সময় ধরে সবার সামনে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে বেপরোয়াভাবে পিটিয়ে জখম করলেও এমপির হুংকারে কেউ তাকে বাধা দিতে সাহস পায়নি।

জানা যায়, গোদাগাড়ীর মাটিকাটা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুল আউয়াল রাজু ফোন করে বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের ৭ জুলাই রাত ৯টায় থিম ওমর প্লাজায় এমপির চেম্বারে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন। অধ্যক্ষ রাজু এমপি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তার ফোন পেয়ে রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাসহ আটজন অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ এমপি ফারুকের চেম্বারে হাজির হন। এসময় এমপি ফারুক চৌধুরি প্রথমেই অধ্যক্ষ সেলিম রেজার কাছে জানতে চান তার কলেজের কতিপয় শিক্ষক একজন অধ্যক্ষ ও দলীয় নেতার স্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলেছেন। প্রিন্সিপাল হিসাবে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

জবাবে অধ্যক্ষ সেলিম বলেন, যদি আপনার কাছে প্রমাণ থাকে আমি তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। এর পরপরই এমপি তার ফোনের রেকর্ড অন করে বিষয়টি অধ্যক্ষ সেলিমকে শুনতে বলেন। এরই মধ্যে এমপি ফারুক ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সেলিম রেজাকে জাপটে ধরে প্রথমেই তার বাম চোখের নিচে সজোরে ঘুসি মারেন। এরপর উপর্যুপরি চলতে থাকে কিল ঘুসি ও লাথি। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ সেলিম প্রায় অচেতন হয়ে পড়লে চেম্বারে আগে থেকে রাখা হকি স্টিক বের করে বেশ কয়েকটি আঘাত করেন সেলিমের বাম হাত, কোমর ও শরীরের নিম্নাঙ্গে। উপস্থিত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের সামনেই সেলিম রেজাকে পিটিয়ে জখম করেন এমপি ফারুক। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষদের একজন সেলিমকে এমপির কব্জা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চেম্বার থেকে বের করে আনেন।

পরে আহত সেলিম রেজা অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সাঈদ আহমেদের চেম্বারে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কয়েকজন স্বজন ও সহকর্মীর সহায়তায় তিনি বাসায় ফেরেন। ঘটনার পর অধ্যক্ষ সেলিম রেজা ক্ষোভে লজ্জায় বাসা থেকে আর বের হননি। মঙ্গলবার রাতে রায়পাড়ার বাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ সেলিম রেজার সঙ্গে কথা বলেন সাংবাদিকরা। প্রথমে কথা বলতে অস্বীকার করলেও পরে আগাগোড়া ঘটনার বিবরণ দেন তিনি।
ওই সাংবাদিককে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা জানান, ৭ জুলাই রাতের ঘটনার পর তিনি বাড়িতেই থাকছেন। তবে সোমবার বিকালে এমপির ঘনিষ্ঠ গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সোহেল আমার বাসায় আসেন। তিনি হোয়াটসঅ্যাপে এমপির সঙ্গে কথা বলেন। পরে আমাকে ফোন ধরিয়ে দেন। এ সময় এমপি সাহেব ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এমপি সাহেব সময় করে আমাকে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বলেন। অধ্যক্ষ সেলিম আরও বলেন, যেহেতু তিনি (এমপি) দুঃখ প্রকাশ করেছেন তাই আমিও আর কিছু বলছি না।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত গোদাগাড়ীর একটি কলেজের অধ্যক্ষ নাম প্রকাশ না করে বলেন, কি বলব কীভাবে বলব। ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। একজন সংসদ সদস্য এমন জঘণ্য কাজ করতে পারেন, আমরা ভাবতেই পারছি না। একজন কলেজ অধ্যক্ষকে গরুপেটা করে পেটানো- কী সাংঘাতিক ঘটনা। আমরা বিচার দেব কার কাছে।
এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, প্রিন্সিপাল সেলিম রেজার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এখনো কালশিরা পড়ে আছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এমপি ফারুক চৌধুরী শুধু সেলিম রেজাই নয়- তারও আগে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। তাদের গায়ে হাতও তুলেছেন। ফারুক চৌধুরীর মতো বেপরোয়া এমপিদের কারণেই সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উচিত এমন নেতাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

কলেজ অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী সাংবাদিককে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে আমার চেম্বারে তারা অনেকেই এসেছিল। নিজেরা মারামারি শুরু করলে আমি গিয়ে তাদেরকে থামাই।

শীর্ষ সংবাদ:
বিয়ে করেও উত্ত্যোক্তকারীদের হাত থেকে বাঁচতে পারলো না কলেজ ছাত্রী উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি মনুষ্যত্বকে গুরুত্ব দিতে হবে: ড. সৌমিত্র শেখর দুমকিতে আ’লীগের বহিস্কৃত নেতা শ্রমিকলীগের সভাপতি অবরোধের সমর্থনে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন আমির হামজা ভাঙ্গুড়ায় শীতের সকালে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বৃষ্টি, ভোগান্তিতে শ্রমজীবীরা বিবাহিত ছাত্রলীগ নেতা যখন বুড়িচং উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক! বৃষ্টি ও শীত নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পিছু হটার প্রশ্নে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র রাজী ফখরুলের থাবা থেকে বাঁচার ক্ষমতা কারও নাই: লিটন সরকার বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে বিশৃঙ্খলার ষড়যন্ত্র করছে : ওবায়দুল কাদের মাটিরাঙ্গায় দুই ইট ভাটায় অভিযান দেড় লাখ টাকা জরিমানা কালাইয়ে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু ভাঙ্গুড়ায় লোকালয়ে মুখপোড়া হনুমান, দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় কুবিতে ভলিবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ফিন্যান্স ও বাংলা বিভাগ সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল চান জাহিদ ফারুক সমিতির নামে বিল ইজারা নিয়ে লুটপাট অনুমতি মেলেনি আ.লীগের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মানববন্ধন নিয়ে যা জানাল ডিএমপি অবরোধের সমর্থনে আগুন জ্বালিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের  অবরোধ,  গ্রেফতার-৩