আমরা পদ্মা সেতু করেছি আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে: প্রধানমন্ত্রী

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on pinterest
Share on print
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা পদ্মা সেতু করেছি আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে। এটা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। বিএনপি আবার প্রশ্ন তোলে কোন মুখে যাদের আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ভরা? এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজা পেয়েছে খালেদা জিয়া। শুধু এতিমের অর্থ কেন নাইকো, গেটকো- এ রকম বহু কেস ঝুলে আছে। ওই কেসে সে তো কখনো কোর্টেই যেতে চায়নি। প্রত্যেকটা প্রজেক্টে দুর্নীতি করে তারা টাকা বানিয়েছে। তারেক জিয়া, খালেদা জিয়া, কোকো সবই। কোকো তো পরে মরেই গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, বন্যা হয়েছে, আজ পর্যন্ত বিএনপির কোনো নেতা বা কেউ কোনো সাহায্য দিয়েছে বানভাসিদের? দেয়নি। ঢাকায় বসে বসে তাদের দলের নেতারা নানা কথা বলে বেড়াচ্ছে। কিন্তু আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমন এমন দুর্গম এলাকায় গেছে যেখানে বন্যার পানির কারণে কেউ পৌঁছাতে পারছে না।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ যে যেখানে তারা সেখানেই কিন্তু ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছে। তারা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তারা খাদ্য সাহায্য দিচ্ছে। উদ্ধার কাজ করছে। বিএনপি বন্যাদুর্গতদের জন্য আজ পর্যন্ত এক মুঠ খাবারও দিতে পারেনি বা তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে এখানে বসে বসে মায়া কান্না করে যাচ্ছে, এটাই হচ্ছে এদের চরিত্র।

তিনি বলেন, মিথ্যা কথা বানানো, আর মিথ্যা কথা বলার যদি কারখানা থেকে থাকে সেটা হলো বিএনপি। তারা মিথ্যা কথা বানানো ও বলতে খুব ভালো পারে। যতটুকু মিথ্যা এটার প্রোডাকশনটা এরা ভালো দেয় এবং বলেও যায়। আমাদের কিছু লোক সেটা বিশ্বাস করে বসে থাকে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই দুর্নীতি করে যদি টাকা না বানাবে বিদেশে এত বিলাস বহুল জীবন-যাপন করে কি করে? কত টাকা খরচ করে সেখানে কোম্পানি খুলেছে এবং সেই কোম্পানিতে প্রথমেই সে যে (তারেক) ব্রিটিশ নাগরিক সেটা লিখেছে। এক বছর পরে সেটাকে আবার সংশোধন করে সেখানে বাংলাদেশের নাগরিক লিখেছে। কারণ মিথ্যা কথা লেখাতে ধরা পড়ে যায়। কাজেই সেটাকে আবার সংশোধনও করেছে। যখন টাকার কথা তুলেছি যে সে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেলো কোথা থেকে? একটা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ব্রিটিশরা কীভাবে নাগরিকত্ব দেয়? সেটা এখন তারা উইথড্র করেছে। এখন বাংলাদেশের লিখেছে। তথ্য তো আমাদের কাছে আছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখানে নিজের ভাগ্য গড়তে আসেনি। আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যদি দেখা যায় আজ পর্যন্ত এদেশের মানুষের যতটুকু অর্জন সবটুকুই আওয়ামী লীগের হাতে। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। এজন্য আওয়ামী লীগকে বার বার ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয় না। কারণ তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে শোষণ করতে পারে না, নির্যাতন করতে পারে না।

সরকারপ্রধান বলেন, ৯৬ সালে সরকারে এসে আমরা যতটুকু অর্জন করতে পেরেছিলাম ২০০১-এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে সবই নস্যাৎ করে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান করেছিল। পাঁচ পাঁচ বার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেছে। খালেদা জিয়া প্রাইম মিনিস্টার থাকতে দুর্নীতিতে এক নাম্বার চ্যাম্পিয়ান। সেই ভাবমূর্তি বাংলাদেশের জন্য কতটা অসম্মানজনক। সেখান থেকে আমরা দেশকে আজকে পরিবর্তন করে এখন বিশ্বে একটা সম্মানজনক স্থানে নিয়ে গেছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি। ওদের (বিএনপি) এই মিথ্যাচার এটা থাকবেই।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আমরা উদ্বোধন করব ২৫ তারিখে। যেমন বানভাসী মানুষের পাশে আওয়ামী লীগ দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড থেকে শুরু করে পুলিশ বাহিনী, প্রশাসন সবাই সেখানে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত তাদের উদ্ধার করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, তাদের খাদ্য দেওয়া সেখানে এতটুকু গাফলতি নেই। ডে ওয়ান থেকে আমরা এই বানভাসী মানুষের পাশে আছি। বন্যা এটা প্রাকৃতিক কারণেই বাংলাদেশে আসবে, হবেই। এর সঙ্গে আমাদের বসবাস করতে হবে। কিন্তু তাই বলে আমাদের যে এত বড় একটা অর্জন পদ্মা সেতু। যেটা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অভিযোগ, দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল যেটাকে আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। প্রমাণ করতে পারেনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কানাডার কোর্টে মামলা দিয়েছিল। সেই মামলায় স্পষ্টভাবে রায়ে বলা হয়েছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যে যে অভিযোগ এনেছে সবই মিথ্যা-ভুয়া, কোনোটাই সঠিক না। একটা অপবাদ দিতে চেয়েছিল সেটা তো আজকে প্রমাণিত যে এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। তারপরে এই সেতুটা যে আমরা করেছি এটা তো একটা মাল্টিপারপাস সেতু আমরা করেছি। সেটা নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলে কোন মুখে? ওরা (বিএনপি) তো কিছুই করে যেতে পারেনি।

যমুনা সেতু নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে খুব বেশি এগোতে পারেনি। কারণ সব জায়গায় তো কমিশন খাওয়ার অভ্যাস। আবার কমিশন তো একজনকে দিলে হবে না। মায়ের জন্য একটা, দুই ছেলের জন্য দুইটা, ফালুর জন্য একটা, অমুকের জন্য একটা- এই করতে করতে কেউ আর ওখানে কাজ করতে পারত না। এত ভাগে ভাগে তাদের কমিশন দিতে হত। সেই কারণেই কোনো কিছু এগোতে পারেনি। আমরা ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে এই যমুনা সেতুতে রেল লাইন, গ্যাস লাইন, বিদ্যুৎতের লাইন নিয়ে এটার ডিজাইনটা আবার মাল্টিপারপাস ব্রিজ করে আমরা তৈরি করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের প্রকৃতি, মানুষের উন্নয়ন আওয়ামী লীগ যতটা বুঝবে অন্যরা তা বুঝবে না। বুঝবে কী করে? বিএনপির হৃদয়ে তো থাকে পাকিস্তান। তাদের মনেই আছে পাকিস্তান। দিল ম্যা হ্যায় প্যায়ারে পাকিস্তান। সারাক্ষণ গুনগুন করে ওই গানই গায়। এই যাদের মানসিকতা তাদের দ্বারা তো বাংলাদেশের ভালো চাইবে না এটা খুব স্বাভাবিক। এটা নিয়ে আপনাদের এত দুঃখ করার, চিন্তা করার কিচ্ছু নাই। আর ওদের কথা যত না বলা যায় ততই ভালো। কারণ ওরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাই বিশ্বাস করে না। বরং এই সবগুলোকে গাট্টি বেঁধে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিলে ভালো হয়। পাকিস্তানের এখন যে অবস্থা ওখানে থাকলেই তারা ভালো থাকবে। এখনো লাহোরে সোনার দোকানে খালেদা জিয়ার বড় ছবি আছে যে ওই দোকানের সোনার গহনা তার খুব প্রিয়।

তিনি বলেন, এদের জন্মও তো বাংলাদেশে না। না জিয়ার জন্ম বাংলাদেশে, না খালেদা জিয়ার জন্ম বাংলাদেশে- কারো জন্মই না। এরশাদও তো কুচ কুচ বিহারি। তারও তো জন্ম হচ্ছে কুচবিহারে। একমাত্র আমার বাবাই ছিলেন এই দেশের, আমিও এই দেশের মাটিতে জন্ম। কাজেই মাটির টান আলাদা। এখানে আমাদের নাড়ির টান। কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য গড়াটাই তো আমাদের লক্ষ্য। সেজন্যই আমরা কাজ করি। আওয়ামী লীগের আদর্শই হচ্ছে জনগণের সেবা করা।

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছিল অভিযোগ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, নেতৃত্ব শূন্য একটা দল ইলেকশন করবে জনগণ ভোট দেবে কী দেখে? ওই চোর, ঠকবাজ, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করা, খুন, অস্ত্র চোরাকারবারী, সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাদেরকে এদেশের জনগণ ভোট দেবে? এ দেশ চালানোর জন্য? তা তো এদেশের জনগণ দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ এ ব্যাপারে যথেষ্ঠ সচেতন। তারা জানে আওয়ামী লীগ নৌকা মার্কা। আর নৌকার যে প্রয়োজন এবার বন্যায়ও তো নৌকার জন্য হাহাকার। নৌকা ছাড়া তো গতি নেই বাংলাদেশে- এটাও মনে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা শুধু এনে দেয়নি, স্বাধীনতার সুফল এখন ঘরে ঘরে পৌছাচ্ছে।

করোনা আবার বাড়ছে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি‌ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা কিন্তু এখানেই থামবে না। এই পানি আস্তে আস্তে নিচে যত নামতে থাকবে ধীরে ধীরে একেকটা এলাকা প্লাবিত হতে থাকবে। কাজেই আমাদের সেই প্রস্তুতিও রাখতে হবে। এটা কিন্তু একেবারে ভাদ্র মাস পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চলতে পারে এই বন্যা। সেটা মাথায় রেখেই আমাদের কিন্তু প্রস্তুতি নিতে হবে।

 

সূত্র: ঢাকা পোস্ট

শীর্ষ সংবাদ:
জিটুজি প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন তরান্বিত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর অ‌বৈধভা‌বে বালু উ‌ত্তোল‌নের দা‌য়ে দুই বালু ব্যবসায়ীকে ৭লাখ টাকা জরিমানা পটুয়াখালীতে শহীদ সেনা অফিসার হাবিবুর রহমানের পরিবারে “সেনা নিকেতন” এর চাবি হস্তান্তর ছেংগারচর পৌরসভা নির্বাচন -২০২৩ আ’লীগের দলীয় ফরম কিনে জমা দিলেন নাছির উদ্দীন ছেংগারচর পৌরসভা নির্বাচন-২০২৩ দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনলেন সেলিম গেজেটে ডিভিএম ডিগ্রির অন্তর্ভুক্তি ও অভিন্ন ডিগ্রি চালুর দাবি শরণখোলায় গাঁজা গাছসহ মাদককারবারি আটক তেল-সার-শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধিতে হিমশিম অবস্থা শরণখোলার চাষিদের ভালুকায় ৪ ডাকাত আটক স্ব-শরীরে সমাবর্তনের দাবিতে ঢাবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান রাজবাড়ীতে ডিবির অভিযানে চোরাই মোটরসাইকেল সহ গ্রেপ্তার ১ ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টির জন্য দ্বিতীয় দিনের মত ইসতিসকার নামাদ আদায় ডলার খরচ করে বিএনপি প্রতিনিয়ত সরকারবিরোধী কুৎসা ও বদনাম রটাচ্ছে : ওবায়দুল কাদের শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসের বিচার শুরু ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই সাত কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা ডিসি অফিসের সম্মেলন কক্ষে হঠাৎ শতাধিক নারীর বিক্ষোভ গলাচিপায় পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু মির্জগঞ্জে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বৃক্ষ রোপণ কাউখালীতে মৎস্য কার্ডধারী জেলেদের মধ্যে ছাগল বিতরণ বন্ধ হয়ে গেল পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র