প্রকল্পের ব্যয় ছাড়িয়েছে হাজার কোটি: ৫ বছরেও বিশেষ পরিবর্তন নেই ট্যানারির

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on pinterest
Share on print

রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্পকে সাভারে সরিয়ে আনার ৫ বছর চললেও চামড়া শিল্পনগরের অবস্থার বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয়নি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ট্যানারিগুলোতে উৎপাদন চলছে। কিছু কিছু ট্যানারি কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুতি সেরেছে। অনেকে আবার এরই মধ্যে মজুত রেখেছেন লবণসহ কাঁচামাল পণ্য। প্রস্তুতি চোখে পড়লেও দেখা যায়নি পরিবেশ রক্ষায় হাতে নেওয়া কোনো পদক্ষেপ।

উচ্চ আদালতের আদেশের পর হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প স্থানান্তর শুরু হয়। ২০০৩ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) চামড়া শিল্প নগরী প্রকল্প হাতে নেয়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপির আওতায় ১৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ব্যয় বাড়ানো হয় প্রকল্পটিতে। ২০১৭ সালে তৃতীয়বারের মতো সংশোধনী এনে ব্যয় বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় নতুন করে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে নতুন করে এ প্রকল্পের ব্যয় গিয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ১৯৪ দশমিক ৪০ একর জমির ওপরে স্থাপিত সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে মোট প্লটের সংখ্যা ২০৫টি।

বিজ্ঞাপন

বিসিকের তথ্য মতে, চামড়া শিল্প নগরীতে ১৬২টি শিল্প ইউনিটকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ ও উৎপাদন কাজ চলছে ১৩৯টি শিল্প ইউনিটের।

এ শিল্প নগরীতে কাজ করে ১৫ হাজারের বেশি শ্রমিক। ১ হাজার ৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পটিতে শ্রমিকদের আবাসন, চিকিৎসা ও যাতায়াত ব্যবস্থার কথা থাকলেও তিনটির কোনোটিই এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। শ্রকিদের জন্য এখনো কোনো আবাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। ফলে অধিকাংশ শ্রমিককেই থাকতে হচ্ছে প্রকল্পের বাইরে।

বিজ্ঞাপন

হিসাব বলছে, সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে দৈনিক ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদন হয়, অথচ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে মাত্র ২৫ ঘনমিটার। ক্রোমিয়াম শোধনের ব্যবস্থাও সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে নেই। অর্থাৎ দৈনিক ১৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য পরিবেশের সঙ্গে মিশেছে। এ হিসেবে গত পাচঁবছরে ২ কোটি ৭৩ লাখ ৭৫হাজার ঘনমিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে গেছে। যার ফলে এসব বর্জ্যের খারাপ প্রভাব পড়েছে আশপাশের এলাকাগুলোতে।

একারনে সাভারের চামড়া শিল্পনগরী এখন স্থানীয়দের কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্জ্য আর উৎকট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ তারা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনে (বিসিক) কে বার বার জানিয়েও ফল মিলছে না বলে অভিযোগ তাদের।

স্থানীয় আমান উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সাথে প্রতারণা করে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সে সময় বলছিল সুন্দর আধুনিক শিল্পনগরী হইবো। আর এখন দুর্গন্ধে টেকা যায় না, বিপদে না পড়লে এ অঞ্চলে কেউ আর এখন থাকে না। ভাড়াটিয়া তো দূরের কথা, মাগনাও কেউ থাকে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বলেন, রাতের আধারে ট্যানারি মালিকরা সরাসরি ময়লা পানি নদীতে ছেড়ে দেয়। এই যে এখন ঈদ আসতেছে, নদীর পানিও বেশী এখন আরও বেড়ে যাবে। চোখের সামনে কত দেখছি প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ নেই। সিইটিপি প্ল্যান শুধু নামেই। কাজের কাজ কিছুই না। প্রতিনিয়ত দূষণ হইতেছে নদী ও আশপাশের এলাকা। আমাদের কাছে ট্যানারি এখন অভিশাপ।

এবিষয়ে ট্যানারির বেশ কয়েকজন মালিকের সাথে কথা হলে তারা জানান, হাজারীবাগ থেকে অনেক আসা নিয়ে হেমায়েতপুর এসেছিলাম। আমাদের সাভারে আনতে সে সময় বলা হয়েছিল আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধার পাপশাপাশি থাকবে পরিবেশবান্ধব বর্জ্য নিষ্কাশনেরও সুবিধা। বাস্তবে এসবের কোনটাই এখানে নেই। আর পরিবেশের কারনে বিদেশি কোম্পানিগুলো মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশর চামড়া আমদানি থেকে।

মুক্তা ট্যানারির জেনারেল ম্যানেজার হুমায়ুন আহমেদ বলেন, ট্যানারী স্থানান্তরিত করার আগে যেসব সুযোগ সুবিধার কথা বিসিক থেকে জানানো হয়েছিল তার মধ্যে সর্বপ্রথম ছিল বর্জ্য নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা। এছাড়াও অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়ার কথা থাকলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। সাধারণ সময়েই ট্যানারীর যে বর্জ্য তৈরি হয় তাতেই উপচে পড়ে ড্রেনে। আর ঈদুল আজহায় কোরবানিতে লাখ লাখ চামড়া আসলে সম্মুখীন হতে হবে বিপদের।
বিসিক শিল্প নগরীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাফুজুর রহমান রিজোয়ানের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে সিইটিপির দায়িত্ব ডিটিআইইডব্লিউটিপিসিএল নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ‘ডিটিআইইডব্লিউটিপিসিএল’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ বলেন, এবার ঈদে আমাদের সম্পন্ন প্রস্তুতি রয়েছে। সিইটিপির সব কয়টি মডিউল পরিষ্কার করা হয়েছে । এবার কোন সমস্যা হবে না।

ঈদের বাড়তি চাপ সামাল দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ক্যাপাসিটি যেটা আছে সেটার বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সকলকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমাদের ক্যাপাসিটির মধ্যে কাজ করতে হবে। এর বাহিরে গেলে তো ওভার ফ্লো হবেই। সেটা আমরা করতে দেবো না।

ধলেশ্বরী নদীতে সরাসরি বর্জ্য ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রিটমেন্ট তো আমরা করেই ফেলি। কিছু কিছু জায়গায় হয়তোবা মাত্রাটা একটু বেশি, সেটা একটা সেন্টারে নিয়ে আসতে কাজ চলছে।

তিনি বলেন, এখনো আমরা ট্যানারিটাকে ১০০ ভাগ কার্যকর করিনি। আমাদের হয়তো ৮০ ভাগ হয়েছে। ২০ ভাগ বাকি আছে নতুন করে শুরু করেছি যেহুতু একটু সময় লাগছে। তবে যে কোন সময়ের চেয়ে এখন আমরা ভালো করছি।

যে লক্ষ্য নিয়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে আসা সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে আর কত সময় লাগবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সম্পন্ন পরিবেশ বান্ধব করতে আরও ১ থেকে ২ বছর সময় লাগবে। কারণ এখানে টেকনিক্যাল ব্যাপার আছে। আমরা আশা করছি ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারব।

শীর্ষ সংবাদ:
বিয়ে করেও উত্ত্যোক্তকারীদের হাত থেকে বাঁচতে পারলো না কলেজ ছাত্রী উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি মনুষ্যত্বকে গুরুত্ব দিতে হবে: ড. সৌমিত্র শেখর দুমকিতে আ’লীগের বহিস্কৃত নেতা শ্রমিকলীগের সভাপতি অবরোধের সমর্থনে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন আমির হামজা ভাঙ্গুড়ায় শীতের সকালে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বৃষ্টি, ভোগান্তিতে শ্রমজীবীরা বিবাহিত ছাত্রলীগ নেতা যখন বুড়িচং উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক! বৃষ্টি ও শীত নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পিছু হটার প্রশ্নে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র রাজী ফখরুলের থাবা থেকে বাঁচার ক্ষমতা কারও নাই: লিটন সরকার বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে বিশৃঙ্খলার ষড়যন্ত্র করছে : ওবায়দুল কাদের মাটিরাঙ্গায় দুই ইট ভাটায় অভিযান দেড় লাখ টাকা জরিমানা কালাইয়ে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু ভাঙ্গুড়ায় লোকালয়ে মুখপোড়া হনুমান, দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় কুবিতে ভলিবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ফিন্যান্স ও বাংলা বিভাগ সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল চান জাহিদ ফারুক সমিতির নামে বিল ইজারা নিয়ে লুটপাট অনুমতি মেলেনি আ.লীগের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মানববন্ধন নিয়ে যা জানাল ডিএমপি অবরোধের সমর্থনে আগুন জ্বালিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের  অবরোধ,  গ্রেফতার-৩