দুমকিতে হতদরিদ্রদের ঘর নির্মাণে অনিয়ম

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on pinterest
Share on print

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে পটুয়াখালীর দুমকিতে গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঘর তৈরীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘরগুলোতে সিমেন্ট বালি, রড, ইট, খোয়া থেকে শুরু করে দরজা জানালায় ব্যবহার করা সামগ্রী গুলোও অত্যান্ত নিন্মমানের ছিল বলে জানাগেছে। উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন ইতোমধ্যে নির্মাণ ত্রুটি থাকায় বেশ কয়েকটি ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ভেঙ্গে ফেলা ঘরগুলো নতুন করে মানসম্মত উপকরণ দিয়ে তৈরী করার কথা বলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-ইমরান।

জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর শুরু হয় গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২। দ্রুততার সাথে শেষ করার জন্য এ ঘরগুলো তৈরীতে কোন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেই এ কাজ সম্পন্ন করছেন। সার্বক্ষনিক তদারকি করছেন তার বিশ^স্ত দু’জন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি। খাসজমিতে তৈরি করা ঘরগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। ‘খ’ শ্রেণীভূক্ত এ বাড়ি গুলো দৃষ্টিনন্দন রঙিন টিনের দুই কামরার সেমিপাকা বাড়ি নির্মাণ করার কথা রয়েছে। প্রতিটি ঘরের আয়তন হবে দৈর্ঘ্যে ১৯ ফুট ৬ইঞ্চি আর প্রস্থে ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি। রান্নাঘর ও শৌচাগার থাকবে। প্রতি ১০ ঘরের জন্য একটি নলকূপ। সব মিলিয়ে বাড়িপ্রতি খরচ ২লাখ ৪০ হাজার টাকা। ইটের সংখ্যা, সিমেন্ট ও বালুর পরিমাণও বলে দেওয়া হয় নকশা মোতাবেক। নির্দেশিকা অনুসারে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করার কথা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর সঙ্গে কোন মিল দেখা যায় নাই। প্রকল্পের জন্য একটি কমিটি থাকলেও কমিটির সদস্যদের সাথে এ নিয়ে কোন সমন্বয় করা হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের জলিশা আশ্রয়ন সংলগ্ন এলাকায় নির্মিত ঘরগুলো নকশা বহির্ভূত, নিন্মমানের উপকরণ ও সঠিক মালামাল দিয়ে তৈরী না হওয়ায় সম্প্রতি জেলা প্রশাসক পরিদর্শনে এসে ওই ঘরগুলো ভেঙ্গে নকশা অনুসরণে পুণনির্মানের নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জলিশা আশ্রয়ন সংলগ্ন ৩৩টি ঘর নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যে ১৭ ছাউনীর আপেক্ষায় রয়েছে। ঘরগুলোর কাজ ৭০/৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এসব ঘরের মধ্যে ত্রুটিযুক্ত ঘরগুলো ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন। স্থানীয়রা জানান, জলিশা আশ্রয়নের অন্তত: ৫টি ঘর তিন দিনে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বাকীগুলোও ভেঙ্গে ফেলার কথা আছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে ওইসব এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নির্মাণ শ্রমিকদের দিয়ে শাবল, হাতুড়ির মাধ্যমে ঘরগুলো ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। গ্রেড ভিম ও আরসিস কলাম বিহীন ঘরগুলোতে কোন রড ব্যবহার করা হয়নি। ঢালাই দেওয়া ভিমগুলোতে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করার সাথে সাথেই বালির মতো ভেঙ্গে পড়ছে। নির্মাণাধীন দেওয়াল গুলো বাঁশ দিয়ে ধাক্কা দিতেই ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে মাটিতে। স্থানীয়রা আরো জানায়, নামমাত্র মাটি খুঁড়ে তৈরী করা হচ্ছিল ভূমিহীনদের ঘর গুলো। নির্মাণ কাজ চলার সময় আশপাশের কোন লোককে প্রকল্পের ধারে কাছে আসতে দিতো না নির্মাণকারীরা। বালু ও সিমেন্টের মিশ্রণে নামমাত্র সিমেন্ট দেওয়া হতো। ঢালাই কাজে ব্যবহার করা হয় নিন্মমানের খোয়া এবং বালু। ঘরের ভিম বা আরসিসি কলম দেয়ার কথা থাকলেও কোন গ্রেডবিম বা কলম দেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের মামলার হুমকি দেওয়া হতো।

স্থানীরা জানায়, এসব ঘর তৈরীকালে সরকারী কোন কর্মকর্তা বা দায়িত্বশীল কাউকে দেখা যায়নি। ঘরগুলো স্থানীয় লোক দিয়েও করা হয়নি। এ প্রকল্পে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি কমিটি রয়েছে যার সদস্য হলেন উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা, এসি ল্যান্ড ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ প্রকল্পের কাজ চলার সময় দায়িত্বশীল কোন লোকের তদারকি না থাকায় নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে তৈরী করা হচ্ছিল ঘর গুলো। যা নির্মাণ হতে না হতেই ভেঙ্গে পড়তে বসেছিল। নির্মাণ কাজে যুক্ত এক নির্মাণ শ্রমিক আলী হেসেন বলেন আমাদের যে মালামাল দিয়ে কাজ করতে বলা হয় আমরা তা দিয়েই কাজ করি। ভাল মন্দ তাদের ব্যাপার। আমরা নিজেরাও জানি কাজটি খুব খারাপ হচ্ছে তারপরও আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা রোজ হিসেবে টাকা পাই আর কাজ করি।

এ ব্যাপারে আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম মর্তুজা বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর তৈরী হয়ে গেলে আমাদের কাছ থেকে গৃহহীনদের নাম নেওয়া হয়। এছাড়া এ প্রকল্পের কোন কাজের সঙ্গে আমাদের ডাকা হয়না এবং জানানোও হয়না। সমস্ত কাজই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা করে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজের ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার মন্তব্য জানা সম্ভভ হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ঘরগুলো মান সম্মতাভাবে নির্মাণ হচ্ছে না মনে করে তা ভেঙে ফেলার নিদের্শ দেওয়া হয়।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, ডিজাইন বহির্ভূত ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ ঘরগুলো ভেঙে পুন:নির্মান করার নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।

শীর্ষ সংবাদ:
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী শিশুদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রিক্সা করে বান্ধবীকে নিয়ে বেড়ানোর সময় কুমিল্লায় ভুয়া পুলিশ আটক কাশিমপুর থেকে ফের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হচ্ছে শামসুজ্জামানকে মেঘনা নদীতে শিল্প–কারখানার বর্জ্যে, মরে ভেসে উঠছে মাছ অবশেষ ট্রেনের টিকিটে সহযাত্রীর নাম বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিদ্যুৎ খাতে বাড়ছে ডলার সংকট রাজনীতিবিদকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন পরিণীতি চোপড়া! শেষ হল ‘জওয়ান’র শ্যুটিং, কবে মুক্তি পাচ্ছে ছবি? যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্ত থেকে ৮ লাশ উদ্ধার আকিজ গ্রুপে চাকরির সুযোগ, সপ্তাহে ২ দিন ছুটি যশোরে জোড়া খুন স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে সংবাদ পরিবেশনের বিচার দাবি ঢাবি শিক্ষক সমিতি ও এডিটরস গিল্ড’র নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আয়োজনে রোজাদারদের মেহমানখানা বাকৃবিতে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধনের নতুন কমিটি গঠিত যশোরে মামলা প্রত্যাহারসহ সাংবাদিকের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি রমজানের শুরুতে কিছু পণ্যের দাম বাড়লেও এখন তা কমে এসেছে: বাণিজ্যমন্ত্রী সিলেট বিএনপির প্যান্ডেল নির্মাণে পুলিশের বাধা রাজবাড়ী সদরে ডিবির অভিযানে ইয়াবাসহ গ্রেফতার ১ নগরকান্দায় ইউপি চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে সড়ক নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ