আসুন মা ইলিশ রক্ষায় সকলেই সোচ্চার হই এগিয়ে আসি

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on pinterest
Share on print

আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। ভাত ও মাছ আমদের প্রধান খাদ্য। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। আমদের প্রিয় মাছ ইলিশ যার নাম শুনলেই জিহ্বায় জল চলে আসে। বাঙালিদের আতিথিয়তায় ইলিশ এক অনন্য ভূমিকা পালন করে। একলক্ষ ইলিশে তেইশ লক্ষ ডিম। ইলিশ প্রজনন মৌসুম ১২অক্টোবর থেকে ২নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিনের মা ইলিশ রক্ষার অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা মা ইলিশ রক্ষার এই অভিযানের সফলতা কামনা করি। ১২অক্টোবর থেকে ২নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও মজুত নিষিদ্ধি করেছে সরকার। রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের জনগণের উন্নয়নের স্বার্থে মা ইলিশ রক্ষা করার অভিযানকে সফল করতে হবে যে কোন মূল্যে।



মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা থাকলেও কিছু অসাধু ব্যক্তির অতিমাত্রার লোভের কারণে গত কয়েক বছর যাবৎ এই পরিকল্পনা ব্যাস্তে যাচ্ছে। আর এই মা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল করতে পারলে দেশের যেমন ইলিশের চাহিদা মিটবে তেমনি বিদেশে ইলিশ রপ্তানির পরিমাণও বাড়বে আসবে বৈদেশিক মূদ্রা। ইলিশের পর্যাপ্ত উৎপাদন ধরে লাখতে না পারায় ইলিশ এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ইলিশ এখন সাধারণ মানুষের কাছে একটি স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে মা ইলিশ এবং জাটকা রক্ষার অভিযান সফল না হওয়ায় ইলিশে উৎপাদন অনেক কমে গেছে এবং গত বছর ও চলতি বছরে ইলিশ মৌসুমেও ছিল ইলিশের আকাল এবং জেলেদের হাহাকার। দুঃখের কথা কি আর কমু শত কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার দিল মা ইলিশ রক্ষার অভিযান আর এখন দেখি জেলেদের মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব। অভিযানের প্রথম এক সপ্তাহ অভিযান জোড়ালোভাবে পরিচালিত হলেও পরের সপ্তাহ থেকে জেলেরা স্থানীয় প্রশাসন, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং নেতাদের ম্যানেজ করেই জেলেদের মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব। জেলেরা একবারও আগামী দিনের কথা একবারের জন্যও না ভেবেই তারা নির্বিচারে মা ইলিশ নিধন করে চলছে। যা অনেকটাই নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুঁড়াল মারার মতো।

মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে জেলেদের মা ইলিশ নিধনের উৎসব সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে , মা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল হবে তো ? জেলেরা কেন নিজেরাই নেজেদের ক্ষতি করছে ? কেন তারা নির্বিচারে তাদের আগামীর রুটিরুজি, জীবন-জীবীকাকে এইভাবে হত্যা করে চলছে ? আর কর্তৃপক্ষ কেনইবা এতো উদাসীনতা ? জেলেরা শুধু রাতে আধাঁরে নয় দিনের আলোতেই মা ইলিশ ধ্বংসের নগ্নতায় মেতে উঠেছে। যা আমাদের সাধারণের মানসিক যন্ত্রণা বৃদ্ধি করে চলছে। জেলেরা মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে।



বিজ্ঞাপন

জেলেরা আগামীর সম্ভবনা এবং জীবন-জীবীকার নিশ্চয়তা না ভেবেই এক ধরনের অন্ধ ধারণার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে । জেলেরা যেহেতু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধন করছে। তাহলে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে মা ইলিশ রক্ষার অভিযান কি নামমাত্র? জেলেরা নির্বিচারে মা ইলিশ নিধন করে চলেছে। যেনো দেখার কেউ নেই। রাষ্ট্রের, পরিবেশের, অর্থনীতির ক্ষতি করে চলছে জেলেরা মা ইলিশ নিধনের মধ্য দিয়ে। জেলেদের আচরণ দেখলে মনে হয় মা ইলিশ রক্ষার অভিযানটি আসলে মা ইলিশকে নিধনের উৎসব। আমরা সামাজিক, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি এবং দেখতে জেলেদের তান্ডব,আবার কোথাও কোথাও কৃর্তপক্ষের হেয়ালীপনা। ইলিশ রক্ষার দায়িত্ব আমার আপনার এবং সবার। আমাদের ভৌগলিক সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে হলে মা ইলিশ রক্ষার কোন বিকল্প নাই। সবখানেই অসাধু কুচক্রীদের কালো থাবা। সমগ্র জায়গাতেই এদর অবাধ বিচরণ চলছে। শেষ পর্যন্তেএদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না আমাদের মা ইলিশও।

মা ইলিশ নিধনের মধ্যামে শুধু জেলেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, সর্বনাশ হচ্ছে দেশেরও। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা মেতে উঠেছে ইলিশ নিধনে। এই জেলেরা কি রাষ্ট্র কিংবা প্রশাসনের চেয়ে অধিক ক্ষমতাধর নাকি প্রশাসনের দুর্বলাতায় জেলেরা এই হীন কাজে মেতে উঠে । মা ইলিশ রক্ষার অভিযান চলাকালীন সময়ে জেলেদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং অতি লোভী জেলেরা বিশেষ করে ভোলা, বরিশাল, পুটুয়াখালী, বরগুণা, পিরোজপুর, শরিয়তপুর, মাদারিপুর, লহ্মীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাওয়া, গজারিয়া, চাঁদপুরের মতলব, রাজরাজেশ্বর, হাইমচর, কাটাখালী, চরভৈরবী, ফেরিঘাট, ঈশানবালাসহ আরো কিছু কিছু এলাকায় দিনের আলোতে এবং রাতের আধাঁরে অনেকটা প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে নিধন করে যাচ্ছে মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ।



বর্তমান সময়েও এইদৃশ্য চোখে পড়বেনা বলে আমরা বিশ্বাস রাখি। কঠোরতা, জবাবদিহিতা এবং সচেতনতার বিকল্প নেই। মা ইলিশকে যদি প্রজনন মৌসুমে রক্ষা করতে না পারি তবে ইলিশ আর নদীতে পাওয়া যাবে না, ইলিশ পাওয়া যাবে যাদুঘরে। আমরা আমাদের ইলিশকে যাদুঘরে দেখতে চাই না। ডুবো চর এবং ভাসমান চরের কারণে নদীতে ইলিশের উৎপাদন কমে যাচ্ছে পক্ষান্তরে মায়ানমারে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী দূষণ এবং নদী দখল ইলিশসহ মিঠা পানির অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিও ক্ষেত্রে বড় বাধা। ইলিশসহ মিঠা পানির অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাননীয় কর্তৃপক্ষকে নদী দূষণ রোধ এবং নদীকে দখলমুক্ত রাখতে হবে। কিছু দিনের নৌকাবিহীন নদৗ যা হবে আগামী দিনের মাছেপূর্ণ নদী। মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার মধ্য দিয়ে আমাদের ইলিশের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং এতে জেলেদের মাঝে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিলে আসবে । মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করতে হলে প্রশাসনের নজরদারী বৃদ্ধি করতে হবে, মা ইলশ রক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপের কঠোর হস্তে সফল বাস্তবায়ন করতে হবে। অভিযানে কেউ যেন কোন প্রকার সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে সেইদিকে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদেরকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রশাসনের পাশাপাশি আামাদের নৌবাহিনী, সেনাবাহিনীকেও ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করার জন্য কাজে নিয়োজিত করা যেতে পারে। মা ইলিশ রক্ষার অভিযানের সময় আমাদের জলসীমায় য়েন ভারতীয় জেলেরা অন্রুবেশ করতে না পারে সেইদিকে সজাগদৃষ্টি এবং উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। জেলেদের জন্য অভিযান মৌসুমে বিকল্প কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কর্মসূচীও গ্রহণ করতে হবে। যদি প্রজনন মৌসুমে ইলিশ নিধন ও জাটকা নিধন বন্ধ থাকে তাহলে প্রতি মৌসুমে ২১ থেকে ২৪ হাজার কোটি নতুন পরিপক্ব ইলিশ পাওয়া যাবে। এতে বছরে সাত হাজার কোটি টাকা মূল্যের ইলিশের বাজার সৃষ্টি সম্ভব হবে । বাংলাদেশে এতে অর্থের প্রবাহ বাড়বে , বাড়বে কর্মসংস্থান। যা নিঃসন্দেহে দেশেরে গোটা অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করে তুলবে পাশাপাশি দেশে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ হবে। আর ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে চক্রবৃদ্ধি হারে। জেলেদের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি তাদেরকে বোঝাতে সক্ষম হতে হবে যে, এই ইলিশ এবং জাটকার মালিক শুধু জেলেরাই। এটা আপনাদের সম্পদ একে রক্ষা করার দায়িত্ব প্রথম আপনাকে এবং শেষ পর্যন্ত আপনাকেই পালন করতে হবে।



জনগণ এবং সরকার সহযোগি হিসেবে কাজ করবে। আর যদি মাছকে রক্ষা করা না যায় তবে সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক এবং সামাজিক নিরাপত্তহীনতায় পরবেন আপনি এবং আপনার পরিবার। ইলিশ এবং জাটকাকে ভালোবাসতে হবে নিজের সন্তানের মতো। সন্তান বড় এবং সুস্থ থাকলে যেমন আপনার জন্য আর্শিবাদ ঠিক তেমনি এই মা ইলিশ ও জাটকা নিধন বন্ধ করতে পারলে আপনার সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। মা ইলিশ নিধন এবং জাটকা নিধনের ক্ষতিকর দিকে নিয়ে ছোট ছোট নাটিকা এবংবিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাই ইলিশের ওপর দেশের সকল জনগণের অধিকার রয়েছে। কিছু অসাধুী ব্যবসায়ী, জেলে,স্থানীয় নেতা এবং প্রশাসনিক লোকের কারণে আমাদের সেই অধিকার ক্ষুন্ন হতে পারে না এবং ক্ষুন্ন হওয়া বিধিসম্মতও নয়। সর্বোপরি আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই মা ইলিশকে রক্ষ করতে হবে। রক্ষা করতে পারলে মা ইলিশ মিঠবে চাহিদা মিলবে অর্থ। তাই আসুন মা ইলিশ রক্ষায় সকলেই সোচ্চার হই এগিয়ে আসি। প্রশাসনিক কঠোরতা এবং স্বচ্চতাই পারে মা ইলিশ রক্ষার অীভযানকে সফল করে তুলতে।

 

সুধীর বরণ মাঝি, শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়, হাইমচর-চাঁদপুর।



শীর্ষ সংবাদ:
‘এক মাসে বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার’ বিএনপি একটি অগণতান্ত্রিক তাই তারা নির্বাচনে আসেনা: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আওয়ামী লীগের চিন্তা-চেতনা শুধুই মানুষের উন্নয়নের: মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় ডিবি পুলিশের দুই সদস্য আহত , আটক ৩ আমার কর্মীদের উপর হামলা হলে আমরা ঘড়ে বসে থাকবো না উচিত জাবাব দিব: এমপি সীমা চাকরি পেলেন শ্রমিক আন্দোলনে নিহত জালালের স্ত্রী নৌকার টিকিটে লড়বেন যেসব নারী কোন স্বতন্ত্র মতন্ত্র আমরা চিনি না, মাইরের ওপর কোন ওষধ নাই: ছাত্রলীগ নেতা রিমন রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও স্বাভাবিক ভাবে চলছে পরীক্ষা ও ক্লাস কালাইয়ে ফার্মাসিস্ট দিয়ে চলছে দুই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র সাতক্ষীরায় সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগে বাণিজ্যের টাকা সভাপতির পকেটে গাজীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এমপি সবুজ গাজীপুরে বাসে আগুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে এমপি পদ ছাড়তে হবে না: ইসি রাজশাহীতে ককটেল হামলায় দুইজন আহত, তিনজন আটক রাজশাহীর আদালত চত্বরে ককটেল বিস্ফোরণ, পরিচ্ছন্নকর্মী আহত জয়পুরহাট পিকআপ ভ্যানে আগুন দেওয়ায় আসামী গ্রেফতার মোংলায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে অবস্থানে কর্মসূচি মাটিরাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক গ্রেফতার ডিবি কার্যালয়ে শামীম ওসমান